দীপেন রায়, মেখলিগঞ্জ: এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মধ্যে অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে সোমবার। কোচবিহারের (Cooch Behar) মেখলিগঞ্জ মহকুমায় গ্রুপ ডি বিভাগের ২০ জনেরও বেশি নাম অযোগ্যদের তালিকায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে তালিকায় কেবল নাম ও রোল নম্বর থাকায় কে কোন স্কুলে কর্মরত বা তাঁদের বাড়ি কোথায় তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। এদিকে অভিযোগ উঠছে, তালিকায় নাম থাকা অনেকে এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের আত্মীয়স্বজন।
মেখলিগঞ্জের যোগ্য কর্মীদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মেখলিগঞ্জ ব্লকে ১০ জন ও হলদিবাড়ি ব্লকে ১০ জন কর্মীর নাম অযোগ্যদের তালিকায় রয়েছে। অভিযোগ, হলদিবাড়ির হেমকুমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য রতনকুমার রায়ের মেয়ে তৃণলতা রায়-এর নাম রয়েছে। আবার দক্ষিণ বড় হলদিবাড়ির প্রাক্তন প্রধান মদন সরকারের জামাই, তথা হলদিবাড়ি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার দুলাল বিশ্বাসের শালা শংকর রায়ের নামও তালিকাভুক্ত রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মদন সরকার বলেন, ‘আমার জামাই কীভাবে চাকরি পেয়েছে জানি না। এনিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে চ্যাংরাবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সবিতা বিশ্বাসের দেওর বাপি বিশ্বাস ও চ্যাংরাবান্ধা অঞ্চল তৃণমূল যুব সভাপতি বিপ্লব রায় পাখাধরা–র নামও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে তালিকায় নাম থাকা মেখলিগঞ্জের ডাঙ্গারহাট নবীনচন্দ্র হাইস্কুলের গ্রুপ ডি কর্মী মোস্তাফিজ রহমান বলেন, ‘পরবর্তীতে আমাদের কী কর্মসূচি হবে তা সবাই মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’ তালিকায় থাকা আরেক অযোগ্য কর্মী শম্পা রায়ও এক তৃণমূল নেতার মেয়ে বলে পরিচিত। এদিকে অযোগ্যদের জন্য সকলে চাকরি হারিয়েছেন বলে ক্ষোভে ফুঁসছেন যোগ্যরা। মেখলিগঞ্জের মৃগীপুরে এক চাকরিহারা কর্মী দেবজ্যোতি রায় লস্কর বললেন, ‘এই অযোগ্যদের জন্য আমাদের কষ্ট করে পাওয়া চাকরি হারাতে হয়েছে। তাই অযোগ্যদের শুধু চাকরি বাতিল নয় শাস্তি দেওয়াও প্রয়োজন।’ এদিকে এই ইস্যুতে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সাধারণ সম্পাদক দধিরাম রায়ের বক্তব্য, ‘তৃণমূল নেতা-কর্মী ও তাঁদের আত্মীয়দের চাকরি দিতেই দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে এসএসসি। যোগ্যদের তার ফল ভুগতে হচ্ছে। এর জবাব সাধারণ মানুষ ভোটে দেবেন।’ যদিও এনিয়ে তৃণমূলের মেখলিগঞ্জ ব্লক সভাপতি কেশবচন্দ্র বর্মন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি জানান, বিষয়টি বিচারাধীন, তাই কিছু বলা উচিত নয়।

