অমৃতা দে, সিতাই: ‘নদীর পাড়ে বাস চিন্তা বারো মাস’। কথাটা যে আক্ষরিক অর্থেই সত্য সিতাইয়ের ব্রহ্মোত্তর চাত্রা গ্রাম পঞ্চায়েতের গাবুয়া এলাকার বাসিন্দারা তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। নদীপাড়ের বাসিন্দা হওয়ায় শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা প্রতি মুহূর্তে তাঁদের ঘরবাড়ি ভাঙনের জেরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ফলে, চিন্তায় পড়েছেন বাসিন্দারা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে গাবুয়ার সিঙ্গিমারি নদীর ভাঙন ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। নদীভাঙনের জেরে বহু পরিবার ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছে। বিঘের পর বিঘে চাষযোগ্য জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙন সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, তাঁরা সিতাই বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচন বয়কটেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সিতাইয়ের বিডিও নিবিড় মণ্ডল জানান, বিষয়টি সেচ দপ্তরকে জানানো হয়েছে। তাঁরা ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে দেখেছেন। সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে প্রশাসনিক মহলে বারবার বাঁধ তৈরির আবেদন জানান গ্রামবাসীরা। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর মিয়াঁ বলেন, ‘প্রশাসনের কাছে বহুবার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি। অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।’
প্রায় প্রতি বছরই নানা ভোট আসে। সে সময় নেতারা হাজারো প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোট পার হতেই তাঁরা সেসব প্রতিশ্রুতি রাখার চেষ্টা করেন না। এবার সিতাই বিধানসভার উপনির্বাচন আসন্ন। উপনির্বাচনের আগেই এই বাঁধ তৈরি না হলে তাঁরা এবার আর ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন। গ্রামবাসী মমতা বিবির কথায়, ‘শুধু বাঁধ নয়, উন্নয়ন বলতে রাস্তাঘাট থেকে বিদ্যুৎ সবকিছুই বেহাল। আমাদের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকায় না। ভোট এলেই আমাদের কদর বাড়ে কিন্তু ভোট পেরিয়ে গেলে কেউ আর কোনও খোঁজ রাখে না। তাই, এবার আসন্ন উপনির্বাচনে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ গ্রামবাসীদের কথায়, যদি অবিলম্বে এই বাঁধ তৈরি করা না হয় তাহলে ওই সিদ্ধান্ত নড়চড় হবে না।
গোটা বছরই নদীভাঙনের চিন্তায় থাকেন গাবুয়ার বাসিন্দারা। পুজোর মুখে নদীভাঙনে অনেকেই ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলেই জানিয়েছেন কোচবিহারের সদ্যনির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া।