তৃণমূলের পার্টি অফিসে প্রচার করলেন বাম প্রার্থী মিলি

কালচিনি: শনিবার কালচিনির নিমতিতে একটি ধাবায় এক টেবিলে বসে চা খেতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার আসনের প্রার্থী প্রকাশ চিকবড়াইক ও বিজেপির এসটি মোর্চার রাজ্য সহ সভাপতি দশরথ তিরকিকে। দুই দলের তরফে ওই চা চক্রকে সৌজন্য বিনিময় বলা হচ্ছে। রবিবার ফের সৌজন্যতার ছবি দেখা গেল আলিপুরদুয়ারের বামফ্রন্ট প্রার্থী মিলি ওরাওঁয়ের প্রচারে।

এদিন মিলি কালচিনির গারোপাড়া চৌপথি এলাকায় দোকানে দোকানে গিয়ে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের কাছে তাঁকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছিলেন। প্রচার চলাকালীন তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন মিলি। সেখানে কোনও নেতা না থাকলেও কয়েকজন কর্মী বসে ছিলেন। মিলিকে দেখে তাঁরাও এগিয়ে আসেন। মিলি নিজের পরিচয় দিয়ে শাসকদলের কর্মীদের কাছে ভোটপ্রার্থনা করেন। তারপর তাঁদের সঙ্গে নমস্কার বিনিময়ের পর মিলি চলে যান অন্যত্র।

এই ঘটনাতেও তৃণমূল ও বামফ্রন্ট সৌজন্য বিনিময়ের তত্ত্ব তুলে ধরছে। বামফ্রন্টের কালচিনি ব্লক আহ্বায়ক বিকাশ মাহালির কথায়, ‘আলিপুরদুয়ার জেলা তথা কালচিনি ব্লকের মানুষ নীতিগত দিক থেকে ভিন্নমতের হলেও সৌজন্যবোধ প্রত্যেকের মধ্যে রয়েছে। আর সেজন্য ফ্রন্ট প্রার্থী আর পাঁচজন ভোটারের সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের সমর্থকদেরও তাঁকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন।’ তৃণমূলের কালচিনি ব্লক সভাপতি অসীমকুমার লামাও একই সুরে বললেন, ‘আমাদের মধ্যে মতাদর্শের পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু আমরা সৌজন্যকে সবসময় গুরুত্ব দিই।’

এদিন বেলা ১০টা নাগাদ বামফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আটিয়াবাড়ি চা বাগান থেকে প্রচার শুরু করেন মিলি। হুডখোলা তিনটি পিকআপ ভ্যানে করে তাঁরা প্রচারে বের হন। রবিবার আটিয়াবাড়ি চা বাগানে কাজ হয়। তাই সেখানে  শ্রমিকদের কাছে গিয়ে তিনি প্রচার চালান। এরপর ভাতখাওয়া চা বাগান হয়ে গারোপাড়া বাগানে যান। যদিও খারাপ আবহাওয়ার কারণে এদিন বাম প্রার্থীর প্রচারের যে লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। ১২টি চা বাগানে প্রচারের কথা থাকলেও ৬টিতে প্রচারের পর এদিন কর্মসূচি শেষ হয়।

মিলি কালচিনি ব্লকের সাতালি চা বাগানের মেয়ে। যদিও এখন তিনি কলকাতায় থাকেন। তাঁর বাবা মনোহর তিরকি বাম আমলে রাজ্যের মন্ত্রী ও সাংসদ ছিলেন। মিলির কথায়, ‘আমাকে অনেকেই চেনেন না। কিন্তু বাবার পরিচয় দিতে সবাই একবারে চিনতে পারছেন। বাবা অসুস্থ থাকায় সব জায়গায় প্রচারে যেতে পারছেন না।’

ভোটের ব্যবধান কমাতে নয় বরং তিনি জিততেই ভোটের ময়দানে নেমেছেন, আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য মিলির। বামফ্রন্টের কালচিনি ব্লক আহ্বায়ক বিকাশ মাহালি, আরএসপির কালচিনি লোকাল কমিটির সম্পাদক পূর্ণমন রাই প্রমুখ প্রচারে উপস্থিত ছিলেন।