উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: যেদিন থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose), সেদিন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) সঙ্গে দ্বন্দ্ব অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে এক জনপ্রিয় সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল। ‘ব্যক্তি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি ‘রাজনীতিক’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকে এগিয়ে রাখবেন আপনি? এই প্রশ্নের জবাবে কোনও রাখঢাক না রেখে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)-কে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ইজ নট মাই কাপ অফ টি।’ রাজ্যপালের এহেন মন্তব্যে ফের রাজ্যের রাজনৈতিক আঙিনায় ঝড় উঠেছে।
এক সংবাদসংস্থায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে মন খুলে কথা বলেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তাঁর বক্তব্যের প্রতি ছত্রেই উঠে এসেছে তাঁদের সম্পর্কের কথা। রাজ্যপাল বলেন, ‘কোন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? আমার সামনে তিনজন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। একজন হলেন ব্যক্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক। দ্বিতীয় হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে আমার পেশাগত সম্পর্ক। তৃতীয় হল রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যা আমার বোঝার ঊর্ধ্বে।’ মুখ্যমন্ত্রীর তিন ধরণের চারিত্রিক গুণাবলী ব্যখ্যা করে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন চলাকালীন ওঁ (মমতা) এই বিষয়গুলি গুলিয়ে ফেলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মিলে গিয়েছিল, কিছু মন্তব্য করেছিলেন। আমিও রাজ্যপাল হিসাবে নয়, ব্যক্তি হিসাবে মানহানির জন্য ওঁর বিরুদ্ধে মামলা করি। আমাদের সম্পর্কের জটিলতা এটাই। এর বাইরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার বন্ধু। মুখ্যমন্ত্রী আমার সহকর্মী। আমি তো রাজনৈতিক নেতা নই। রাজনৈতিক নেতারা নিজস্ব এক ধরনের পথে চলেন। আমার আত্মসম্মানের সঙ্গে আমি তা মিলে যেতে দেব না।’
উল্লেখ্য, রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক ইস্যুতে টানাপোড়েন দেখেছে রাজ্যবাসী। সম্প্রতি সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ, রাজভবনে মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানি একের পর ঘটনায় রাজ্যপালের চারিত্রিক ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি নবান্নের (Nabanna) এক বৈঠক থেকে মমতা বলেছিলেন, রাজভবনে মহিলারা যেতে ভয় পান। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন সি ভি আনন্দ বোস। সুতরাং রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর এই তলানিতে ঠেকে যাওয়া সম্পর্ক নিয়ে, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের মন্তব্যে শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা।