সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় (University)। অথচ এখনও দক্ষিণ দিনাজপুরের ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য ছুটতে হচ্ছে ভিনজেলায়। হবে নাই বা কেন! দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Dakshin Dinajpur University) নামে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে, সেখানে মাত্র তিনটি বিষয় পড়ানো হয়। প্রতিষ্ঠার তিন বছর পরেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন নেই, স্থায়ী অধ্যাপকও নেই। নেই আরও অনেক কিছুই। আড়ালে আবডালে অনেকেই বলেন, এটা নাকি ভোটমুখী বিশ্ববিদ্যালয়।
শনিবার থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হল। প্রথম থেকেই এখানে ইংরেজি, অঙ্ক আর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ানো হয়। এবারও ওই তিনটি বিষয়েই ভর্তি চলছে। তাই বাধ্য হয়ে অন্যান্য বিষয়ের ছাত্রছাত্রীরা অন্য জেলায় যাচ্ছেন। এর জন্য যে রাজ্য সরকারই দায়ী, তা পরোক্ষে মেনে নিয়েছেন উপাচার্য দেবব্রত মিত্র। তাঁর বক্তব্য, ‘মাত্র তিনটি বিষয় নিয়ে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। বিভিন্ন বিষয় চালু করার জন্য রাজ্যকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনুমোদন মেলেনি। তাই অন্য বিষয়ের পড়ুয়ারা বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।’
বালুরঘাটের এক ছাত্র মিহির দাস বলছেন, ‘আমি এডুকেশন নিয়ে পড়তে চাই। কিন্তু নিজের শহরে থেকে এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই। দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি, অঙ্ক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান আর বালুরঘাট কলেজের স্নাতকোত্তর বিভাগে বাংলা, ইতিহাস ও সংস্কৃত চালু রয়েছে। তাই আর্থিক সামর্থ্য না থাকলেও আমাকে আমার পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়তে অন্য জেলায় আবেদন করতে হচ্ছে।’
দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন কবে হবে, কেউ জানে না। কারণ, তার জন্য অর্থ বরাদ্দই হয়নি। একবার এখানে, একবার ওখানে করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কোনওরকমে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্ট্যাটুট। এমনকি প্রাথমিকভাবে যে কাউন্সিল গঠন করতে হয়, তাও এখানে করা হয়নি। এই কাউন্সিল গঠন না হওয়ায় তিন বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী নিয়োগের জন্য পদই তৈরি করা যায়নি। ফলে উপাচার্য ছাড়া এখানে কোনও স্থায়ী কর্মী নেই। শিক্ষা দপ্তরকে বারবার চিঠি দিয়েও এই সমস্যাগুলির সমাধান করা যায়নি বলে অভিযোগ উপাচার্যের।
জেলায় গুঞ্জন, সত্যিই কি এই বিশ্ববিদ্যালয় ভোটমুখী? কারণ, কোনও ভোট আসলেই এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শাসকদলের লোকজনের নানা আশ্বাস শোনা যায়। তারপর, সব চুপ।