সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: ভবনে ঘুরছে সাপ। ক্যাম্পাস জুড়ে নোংরা জল। যেন আস্ত পুকুর। ওই জমা জল (University Waterlogged) পার করে ক্লাসরুমে যেতে শুক্রবার আছাড় খেলেন দুই ছাত্রী। জুতো খুলে প্যান্ট গুটিয়ে ওই নোংরা জল পেরিয়েই নিজের দপ্তরে পৌঁছোলেন দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Dakshin Dinajpur University) উপাচার্য।
নিজস্ব ভবন না থাকায় গত কয়েক মাস ধরে বালুরঘাট বিএড কলেজের (Balurghat B.Ed College) অব্যবহৃত হস্টেলে বিশ্ববিদ্যালয় চালু রয়েছে। এই ভবনটি পুরোনো। সমস্যায় জর্জরিত। বর্ষাকালে জমা জলের সঙ্গে বিষাক্ত সাপের উৎপাতও সামলাতে হচ্ছে পড়ুয়া, অধ্যাপক, কর্মী সহ সবাইকে। এই নরকযন্ত্রণা থেকে কবে মুক্তি মিলবে, কবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন তৈরি হবে, কেউ জানে না।
প্রথম থেকেই দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় নানা জটিলতা নিয়ে পথচলা শুরু করে। বালুরঘাট নাকি গঙ্গারামপুর, কোথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন তৈরি হবে তা নিয়ে প্রথমেই নেতা-নেত্রীদের মধ্যে টানাটানি চলে। অবশেষে বালুরঘাটের মাহিনগরে ওই ভবন তৈরির কাজের সিদ্ধান্ত হলেও প্রথম দফায় শুধু প্রাচীর নির্মাণের বরাদ্দ মেলে। আজ পর্যন্ত ভবন নির্মাণের বরাদ্দ পায়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়। নিজস্ব ভবন ও কোনও পরিকাঠামো না থাকায় ২০২১ সালে শহরের একটি ভাড়াবাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন শুরু হয়। চকভবানির ভাড়াবাড়ি ছেড়ে প্রথমে বালুরঘাট গার্লস কলেজ, এরপর পুরসভার একটি ভবন বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়ার জন্যে চুক্তি হয়। কিন্তু ওই ভবন পেতে দেরি হচ্ছে অজুহাত তুলে বালুরঘাট বিএড কলেজের একটি অব্যবহৃত হস্টেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করে। এবার সেই হস্টেলের পরিকাঠামো নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অনল সাহা বলেন, ‘বর্ষাকালে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করতে খুবই অসুবিধে হচ্ছে। অনেক জল জমে রয়েছে।’ অতিথি অধ্যাপক মন্মথ কর বলেন, ‘ক্যম্পাসে যেমন জল জমে রয়েছে, তেমনই সাপ ঢুকে পড়ছে। আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে।’
উপাচার্য দেবব্রত মিত্র বলেন, ‘ক্যাম্পাসের নিকাশি ঠিক না থাকায় নোংরা জল জমে থাকছে। আজ দুই ছাত্রী পিছলে পড়ে গিয়েছে। আমি নিজে জুতো খুলে প্যান্ট গুটিয়ে অফিসে এসেছি। নিজস্ব ভবন না পাওয়া পর্যন্ত সমস্যা মিটবে না।’