অনুপ সাহা, ডালিমটার (কালিম্পং): ‘এ গানের প্রজাপতি (Butterfly) পাখায় পাখায় রং ছড়ায়’- গানটির কথা মনে আছে? স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা করলেও নো প্রবলেম। ঘুরে আসুন রংবেরংয়ের হাজারও প্রজাপতির আপন দুনিয়া কালিম্পং জেলার গরুবাথান ব্লকের ডালিমটারে।
লুপ পুলের সৌজন্যে চুইখিম, লোলেগাঁওয়ের পথে যখন গাড়িঘোড়ার যাতায়াত বেড়েছে, কংক্রিটের জঙ্গলে প্রকৃতি হারিয়েছে তার নিজস্বতা, সেখানে ডালিমটার এখনও সবুজে ঘেরা। এই রাস্তায় গাড়ি চলাচল প্রায় নেই বললেই চলে। আর তাই ডালিমটারে (Dalim Tar) পৌঁছানো পথেই অত্যন্ত দুর্লভ প্রজাতির চোখধাঁধানো প্যারিস পিকক, রেড হেলেন, চকোলেট অ্যালবাট্রস, ব্লু-টাইগার, ইয়েলো অরেঞ্জ, কমন মরমন প্রজাতির প্রজাপতি দেখে উচ্ছ্বসিত প্রকৃতিবিদ যুধাজিৎ দাশগুপ্ত, প্রজাপতি বিশেষজ্ঞ ডঃ তুষার ঘোষাল, শিলিগুড়ির অধ্যাপক নীনা সিং মুখোপাধ্যায়, মহুয়া সিনহা প্রমুখ।
শুক্রবার পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফ-এর চতুর্থ বর্ষের প্রজাপতি পর্যবেক্ষণ শিবির শুরু হয়েছে। এই উপলক্ষ্যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী সহ অধ্যাপক, লেখক মিলিয়ে ২০ জনের একটি দল আগামী তিনদিন ধরে ডালিমটারের জঙ্গলে প্রজাপতি পর্যবেক্ষণ করবে। শিবিরে ন্যাফ-এর মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘শুধুমাত্র সৌন্দর্যের জন্যই প্রজাপতিকে ভালো লাগা নয়, বাস্তুতন্ত্রেও প্রজাপতি, মথের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে প্রজাপতির সংরক্ষণও জরুরি।’ যুধাজিৎ আবার শিবিরের শুরুতেই বলেন, ‘জিজ্ঞাসু-র চোখ দিয়ে প্রজাপতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। প্রজাপতি কী করতে চাইছে? ডিম পাড়তে চাইছে কি না, নাকি ভয়ে ও পালিয়ে বেড়াচ্ছে, এসব তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই এবারের শিবির।’
অধ্যাপক নীনা বলেন, ‘একসময় চুইখিমও প্রজাপতির স্বর্গরাজ্য ছিল। সেখানে রাস্তা তৈরির জন্য কয়েক হাজার গাছ কেটে নেওয়ার ফলে আগামী কয়েক প্রজন্মের প্রজাপতির বংশ ধ্বংস করা হয়েছে। ঠিক তার উলটো ছবি নির্জন, নিরিবিলি ডালিমটারে।’ তবে কি চুইখিমের প্রজাপতি, পাখির দল চুইখিমের পাহাড়ি আস্তানা ছেড়ে ডালিমটারে পাড়ি দিয়েছে? অনিমেষ বলেন, ‘এই প্রথম ডালিমটারে শিবির আয়োজন করা হয়েছে। এই মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়।’