সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: বুধবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে পুরনিগমের সরবরাহ করা পানীয় জল খেতে নিষেধ করেছেন মেয়র গৌতম দেব(Goutam Deb)। আর তারপরই শহরে জারবন্দি জলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন অনেককেই দোকানে লাইন দিয়ে জল কিনতে দেখা গিয়েছে। জারবন্দি জলের দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেদিকে নজর রাখছে পুরনিগম।
অন্যদিনের মতো গতকালও বোতলে জল ভরে রেখেছিলেন হায়দরপাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ তানিয়া ভৌমিক। পুরনিগমের সরবরাহ করা জল(Siliguri Water Crisis) খাওয়া যাবে না, এখবর শোনা মাত্র দ্রুত বোতলবন্দি জল বেসিনে ফেলে দেন। কিন্তু পানের জন্য তো জল চাই, তার ব্যবস্থা করতে তানিয়া ছোটেন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম সংলগ্ন গোষ্ঠ পাল মূর্তির পাশে একটি দোকানে। ততক্ষণে আরও অনেকেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। রীতিমতো লাইন দিয়ে সেখানে সকলে জল কিনছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘চাহিদা বেড়েছে, এই সুযোগে যাতে কেউ অতিরিক্ত দাম না নেন, সেদিকে নজরদারি প্রয়োজন।’
জল বিক্রেতা ভীম শর্মা অবশ্য বলছেন, ‘চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। কিন্তু দাম বাড়ানোর কোনও জায়গা নেই।’
এদিন সময় যত গড়িয়েছে, ততই মানুষকে জলের জন্য ছুটতে দেখা গিয়েছে। কেউ ২০ লিটার, কেউ ৫ লিটারের জলের জার কিনে বাড়ি ফিরেছেন। ডিস্ট্রিবিউটারদের কাছেও ছিল ভিড়। শক্তিগড়ের জল ব্যবসায়ী রনি সাহার কথায়, ‘পাঁচ লিটারের জারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ৫ লিটারের জার ৪০ টাকা ও দুই লিটারের ৯টি জলের বোতল ১৩০ টাকায় বিক্রি করছি।’
চাহিদা বাড়ার সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী এদিন জলের বোতলের দর বাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ। এদিন সকালে ২০ লিটারের জলের জার ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সন্ধ্যা হতে হতে তা ৮০ টাকায় পৌঁছে যায় কিছু জায়গায়।
কলেজপাড়া সংলগ্ন চিলড্রেন্স পার্কের কাছে দোকানে জল বিক্রি করেন উত্তম নাগ। তাঁর কথায়, ‘এতদিন ৬০ টাকা করে একটি জার বিক্রি করে এসেছি। এদিনও একই দাম রাখা হচ্ছে।’
যদিও এতে আশ্বস্ত হতে পারছে না আমজনতা। সুভাষপল্লির বাসিন্দা বিকাশ সাহা, সন্তোষ দাসদের বক্তব্য, ‘যেখানে জলের দাম বেশি চাওয়া হবে, সেখানে মানুষকে রুখে দাঁড়ানো উচিত। পাশাপাশি পুলিশেও অভিযোগ জানানো দরকার।’
পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে শিলিগুড়ি পুরনিগম। পুরনিগমের জল বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত। তাঁর কথায়, ‘মেয়র সমস্ত থানার আইসিকে নিয়ে আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি যাঁরা জলের ব্যবসা করেন তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। সুযোগ বুঝে যাতে কেউ জলের অতিরিক্তি দাম নিতে না পারেন, সেটা মেয়র দেখার কথা বলেছেন।’