রাঙ্গালিবাজনা: স্বামী মারা গিয়েছেন বছর তিনেক আগে। উপার্জন বলতে ভরসা বিধবা ভাতার কয়েকশো টাকা। সেটাও নিয়মিত মেলে না। এদিকে মাঝেমাঝেই অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। একমাত্র সন্তান মানসিক ভারসাম্যহীন এবং বোবা। ফলে চেয়েচিন্তে অন্ন জোটাতে হয় আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ব্লকের দক্ষিণ দেওগাঁওয়ের আদিবাসীপাড়ার পূর্ণিমা তিরকিকে। একদিকে ঘরে অন্নের অভাব। আরেকদিকে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে সুভাষ তিরকি হারিয়ে যায় মাঝেমাঝেই। অসুস্থ পূর্ণিমা শারীরিক অক্ষমতার জন্য এখন আর কাজকর্মও করতে পারেন না। ফলে প্রতিবেশীদের দয়ায় বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘মরে গেলেই বেঁচে যাই।’
রাঙ্গালিবাজনা পাঁচমাইল রোডের কাছে একটি জরাজীর্ণ ঘরে বাস করেন মা ও ছেলে। মাথার ওপর টিনের একচালা থাকলেও বেড়াগুলি জরাজীর্ণ। হু হু করে বাতাস ঢোকে রাতে। ঠান্ডায় কাঁপতে থাকে মা ও ছেলে। কয়েকজন অবশ্য পূর্ণিমার দুর্দশা দেখে কয়েকটি পুরোনো কাপড় এবং কম্বল দিয়েছেন। কিন্তু পূর্ণিমার অন্ন সংস্থানের নির্দিষ্ট কোনও মাধ্যম নেই। প্রতিবেশীরা জানান, পূর্ণিমা মৃগী রোগে ভুগছেন। মাঝেমাঝেই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। কিছুদিন আগে অজ্ঞান হয়ে উনুনের ওপর পড়ে গিয়েছিলেন। ফলে পুড়ে গিয়েছে শরীরের একাধিক অংশ। এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তিনি। দীর্ঘদিন ধরে পুষ্টিকর খাবারের অভাবে এখন ভালো করে চলাফেরাও করতে পারেন না। অথচ যখন স্বামী বেঁচে ছিলেন তখন দু’জনেই দিনমজুরের কাজ করতেন। আর দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে পূর্ণিমাও মাঝে মাঝে অসংলগ্ন কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে দেওগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রহিফুল আলম জানান, পূর্ণিমাকে মাঝেমাঝেই একশো দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়া হয়। এছাড়া সমীক্ষা করে বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্প ঘর প্রাপকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ওই তালিকায় পূর্ণিমারও নাম রয়েছে।