শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

Cooch Behar | গদাধরের ভাঙনে ত্রস্ত ধাধিয়াল, সরকারি দপ্তরে আবেদন করেও সাড়া মেলেনি

শেষ আপডেট:

তুফানগঞ্জ: নদীর ধারে বাস, চিন্তা বারো মাস। এই প্রবাদবাক্য মধ্য ধাধিয়ালের বাসিন্দাদের জীবনে ফলে গিয়েছে। প্রতি বছর পাড় ভাঙতে ভাঙতে গদাধর নদী লোকালয়ের দিকে এগিয়ে আসছে। বিপদগ্রস্তদের রাতের ঘুম উবে যাচ্ছে। বর্ষা যত এগিয়ে আসছে, ভুক্তভোগীদের চিন্তা ততই বাড়ছে। প্রাণে বাঁচতে অনেকে দু-তিনবার অন্যত্র ভিটে সরিয়ে নিয়েছেন। তবুও রেহাই নেই। নদী ক্রমাগত এগিয়ে আসায় বাসিন্দাদের অনেকের শেষ সম্বল আবাদি জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। যে জমি খাবারের জোগান দিত, সেও আজ আর নেই। ফলে কৃষিজীবী গ্রামবাসীরা রুজিরুটির তাগিদে নিঃস্ব হয়ে শ্রমিক বনে গিয়েছেন। গ্রামবাসীরা জানালেন, নদীভাঙন রুখতে বাঁধের নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আবেদন করেও কাজ হয়নি।

এ ব্যাপারে নাককাটিগাছ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কোহিনুর খাতুন বলেন, ‘বাঁধ তৈরি নিয়ে সেচ দপ্তরের সঙ্গে কয়েকবার কথা হয়েছে। ফের সমস্যার বিষয়ে সেচ দপ্তরকে জানানো হবে।’ তুফানগঞ্জ মহকুমা সেচ দপ্তরের আধিকারিক সৌরভ সেনের বক্তব্য, ‘কর্তৃপক্ষকে বাঁধ তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থবরাদ্দ হলে কাজ শুরু হবে।’

তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের নাককাটিগাছ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্য ধাধিয়াল এলাকা দিয়ে গদাধর নদী বইছে। এখন এই নদীই শতাধিক গ্রামবাসীর কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামবাসীরা জানালেন, ২০১১ সাল থেকে লাগাতারভাবে এলাকায় বাঁধ তৈরির জন্যে আবেদন জানিয়ে প্রচুর কাঠখড় পোড়ানোর পর চার বছর আগে ১৮০ মিটারের মতো বাঁধ নির্মিত হয়। এখনও আরও প্রায় ২৫০ মিটার বাঁধ নির্মিত হওয়া দরকার। বছর দুই আগে গ্রামের প্রবেশপথ নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। নদী থেকে ১৫-২০ হাত দূরে গ্রামবাসী মাতাব সরকারের বাড়ি। এবছর বর্ষার আগে বাঁধ তৈরি না হলে কী হবে তা ভেবে মাথায় হাত মাতাবের। মাতাব বললেন, ‘রাক্ষুসে নদীর হাত থেকে বাঁচতে এর আগেও বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল। আবারও হয়তো রক্ষা মিলবে না।’ আরেক গ্রামবাসী রেজ্জাক সরকার বলেন, ‘নানা সরকারি দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করেও কোনও কাজ হয়নি। এদিকে আমার পাঁচ বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। বাকি জমি বাঁচাতে না পারলে না খেয়ে মরতে হবে।’ একই দশা আরও অনেক গ্রামবাসীর। বর্ষায় গদাধর নদী ফুলেফেঁপে উঠে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। এসময়ে নদী দু’কূল ছাপিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। ভিটেমাটি ছেড়ে গ্রামবাসীদের অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়।

Mistushree Guha
Mistushree Guhahttps://uttarbangasambad.com/
Mistushree Guha is working as Sub Editor. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Online. Mistushree is involved in Copy Editing, Uploading in website.

Share post:

Popular

More like this
Related

Weather Forecast | চড়বে পারদ, শনিতেই তাপমাত্রা পেরোবে ৪০ ডিগ্রি! তীব্র গরমের পূর্বাভাস দক্ষিণ দিনাজপুর-মালদায়

পতিরাম: গত তিনদিন ধরে প্রচন্ড গরমে একেবারে নাজেহাল দক্ষিণ...

Kishanganj | কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর নজরদারি বেড়েছে নেপাল সীমান্তেও, সতর্ক এসএসবি-পুলিশ  

কিশনগঞ্জ: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা বাড়ল ইন্দো-নেপাল সীমান্তে।...

Siliguri | দাবি না মিটলে উত্তরকন্যায় অবস্থানে বসার হুঁশিয়ারি! মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চায় দলিত একতা মঞ্চ

শিলিগুড়ি: নিজেদের দাবি পূরণে হয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে...

Malda | তীব্র দাবদাহের মাঝে ব্যাপক জলকষ্ট! রাস্তায় বালতি রেখে বিক্ষোভে মহিলারা

চাঁচল: শুরু হয়েছে তীব্র দাবদাহ। চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। তার...