শিলিগুড়ি: গুটিগুটি পায়ে বর্ষা হাজির হতেই ভোগান্তি বাড়ছে নিউ জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকায়। একদিকে যেমন হয়রানির শিকার এনজেপি স্টেশনে আসা পর্যটক ও যাত্রীরা, অপরদিকে রেলের উদাসীনতায় সমস্যা তৈরি হয়েছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৩৩, ৩৪, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে। এই কয়েকদিন ট্রলি হাতে জমা জল এড়িয়ে হাঁটতে দেখা গিয়েছে বহু পর্যটককে।
এদিকে, সামান্য বৃষ্টিতেই ফুলবাড়ি-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে। অম্বিকানগর আন্ডারপাসে হাঁটুজল। বারবার বিভিন্ন মহলে সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার রেলের নিউ জলপাইগুড়ির এডিআরএম সঞ্জয় চিলওয়ারওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। ‘এডিআরএম ব্যস্ত রয়েছেন, তাই দেখা করতে পারবেন না’ বলে এক কর্মী মারফত জানিয়ে দেওয়া হয়।
অম্বিকানগর, সাউথ কলোনি, মাইকেল মধুসূদন কলোনি, সিপাহিপাড়া সহ ফুলবাড়ি-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজার হাজার মানুষ অম্বিকানগর আন্ডারপাস হয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। অথচ সামান্য বৃষ্টিতেই আন্ডারপাসে জমেছে জল। ওই এলাকায় জলনিকাশি ব্যবস্থা বেহাল প্রায় দেড় বছর ধরে। মেরামতের অভাবে জলের নীচে থাকা গর্ত দেখা যাচ্ছে না। ফলে বৃষ্টিতে জল জমে প্রায়ই বাইক, স্কুটার, টোটো উলটে দুর্ঘটনা ঘটছে। গত এক মাসে এরকম প্রায় ৫০-৫৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
পুরনিগমের ওয়ার্ডগুলিতে বেশ কয়েকটি রাস্তা ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। দেড়-দুই বছর ধরে সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে না। গতবছর দুর্গাপুজোর আগে মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছিলেন এডিআরএম। কিন্তু এতদিনেও সূর্য সেন কলোনি, সেন্ট্রাল কলোনি, মোড় বাজার এলাকার ভাঙা রাস্তাগুলি সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি।
সূর্য সেন কলোনির বাসিন্দা তনিমা হালদারের অভিযোগ, ‘আমরা সাধারণ নাগরিক সরকারকে ট্যাক্স দিই। অথচ আমাদের রাস্তা দিয়ে চলা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ ভাঙা রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে না কেন, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আনন্দ সিনহা বলেন, ‘আদর্শ আচরণবিধি উঠে গেলে রেলের কাছে আবেদন করা হবে।’
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন চত্বরের হালও তথৈবচ। পার্কিং এলাকা থেকে প্রচুর যাত্রী গাড়িতে চাপেন। সাউথ কলোনির দিক থেকে শিলিগুড়িতে আসার জন্য বহু মানুষ টোটো কিংবা অটোতে চাপেন। স্টেশন চত্বর থেকে ট্রাকস্ট্যান্ডের রাস্তা দিয়ে বের হতে গেলে ভাঙা রাস্তার সম্মুখীন হন সকলে। একই অবস্থা পার্কিং এলাকা ও ভিআইপি রোডের। ফলে পর্যটকদের কাছে এই এলাকা সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশ। গোটা বিষয়ে রেল প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা।