দিনহাটাঃ দিল্লিতে কাজ করতে গিয়ে এক মহিলা ও তিন শিশু সহ মোট সাতজন সাবেক ছিটমহলের ভারতীয় নাগরিককে আটক করল দিল্লি পুলিশ। শনিবার দিনহাটায় সাবেক ছিটে বসবাসকারী আবাসন থেকে এমনই অভিযোগ করেছেন তাঁদের পরিবারের লোকেরা। তাঁদের অভিযোগ, গত বুধবার অর্থাৎ ২৫ জুন সামসুল হক, রেজাউল হক, রবিউল হক, রাশিদা বেগম, মহম্মদ রুমানা হক, রাইহান হক, রুমানা খাতুনকে আটক করে। এরা প্রত্যেকেই গত ছয়মাস আগে দিল্লি ইটভাটায় কাজ করতে গিয়েছিলেন বলে পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে। এদিন পরিবারের লোকজন উওরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ ও দিনহাটা থানায় গিয়ে আটক হওয়া সকলের বৈধ কাগজ জমা দিয়ে আসেন।
আর এই ঘটনার পর থেকেই দুশ্চিন্তায় পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের তরফে অভিযোগ, মূলত বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণেই তাদের বাংলাদেশি সন্দেহে দিল্লি পুলিশ আটক করেছে। যাদের আটক করা হয়েছে তাঁরা প্রত্যেকেই সাবেক ছিট মহলের বাসিন্দা। দিনহাটায় থাকা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, নাগরিকত্বের বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও তাঁদের দিল্লি পুলিশ নানাভাবে হেনস্তা করছে। শুধু তাই নয় তাঁদের ওপর শারীরিক নির্যাতন করেছে পুলিশ। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও কেন আটক করেছে পুলিশ, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আটক হওয়া সামসুলের স্ত্রী আজিনা বিবি।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ভারত বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পাদিত হয়। এরপরেই বাংলাদেশের ভেতরে ভারতীয় ছিটমহল গুলির বাসিন্দারা বিনিময়ের ফলে ভারতে চলে আসে। তাঁদের জন্য দিনহাটা শহরের বলরামপুর রোড সংলগ্ন এলাকায় স্থায়ী বাসস্থান গড়ে তোলা হয় সরকারের তরফ থেকে। সেখানেই বর্তমানে থাকছেন সাবেক ছিটের বাসিন্দারা। সেখান থেকেই ভিন রাজ্যে কাজ করতে পাড়ি দিয়েছিলেন বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা। আর তাঁদের আটক করার পর থেকেই নাওয়া খাওয়া ভুলেছে দিনহাটায় থাকা পরিবারের বাকি সদস্যরা। তাদের একমাত্র দাবি, নাগরিকত্বের বৈধ কাগজপত্র যেহেতু প্রত্যেকের কাছে আছে, তাই তাঁদের মুক্তি দিক দিল্লি পুলিশ। দিনহাটা থানার তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানান এক আধিকারিক।