শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: ডুয়ার্সের চা বাগানগুলি এবছর ১০ ধরনের পোকামাকড় ও রোগের কবলে (Tea Garden)। চা বাগানের ‘ত্রাস’ হিসেবে পরিচিত লুপার নামে মারণ পোকা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হেলোপেলটিস, রেড স্পাইডার, গ্রিন ফ্লাই, থ্রিপসের মতো পোকামাকড় সহ ব্যাকটিরিয়াল ব্লাইট, ফিউসেরিয়াম ডাইব্যাক, গ্রে ব্লাইট ও রেড রাস্টের মতো রোগ। সম্প্রতি চা গবেষণা সংস্থার (টিআরএ) উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক গবেষণা ও উন্নয়নকেন্দ্রের পক্ষ থেকে ডুয়ার্সের চা বাগানগুলির গত মে মাসের উৎপাদন ও বৃষ্টিপাত সংক্রান্ত যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে তাতে ওই সমস্ত রোগপোকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চা বণিকসভাগুলিও টিআরএ-র পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে।
টিআরএ জানাচ্ছে, লুপারের হামলা সবচেয়ে বেশি মারাত্বক আকার ধারণ করেছে কালচিনি ও বিন্নাগুড়ি সাব-ডিস্ট্রিক্ট এলাকার বাগানগুলিতে। ডামডিম, চুলসা, নাগরাকাটা, দলগাঁও, জয়ন্তী সাব-ডিস্ট্রিক্ট এলাকার বাগানগুলিও লুপার তাণ্ডবের বাইরে নয়। মোট ৭টি সাব-ডিস্ট্রিক্টের বাগানেই হেলোপেলটিস, রেড স্পাইডার, গ্রিন ফ্লাই, থ্রিপসের মতো পোকামাকড়ের হামলা দেখা গিয়েছে। সঙ্গে বাড়ছে ব্যাকটিরিয়াল ব্লাইট, ফিউসেরিয়াম ডাইব্যাক, গ্রে ব্লাইট, রেড রাস্টের মতো নানা রোগ। এমন আবহেও টিআরএ-র রিপোর্টে আবার মে মাসের উত্পাদন বাড়ার বার্তাও রয়েছে। গত বছরের মে মাসের চেয়ে এবার উৎপাদন প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে বলে টিআরএ তাদের সদস্যভুক্ত বাগানগুলির কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে জানিয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ধরলে এবার ওই সময়ের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।
যদিও চা বণিকসভা ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইটিপিএ) এর সম্পাদক রামঅবতার শর্মা বলেন, ‘এবার বাগানগুলিতে রোগপোকার হামলার বহর এককথায় নজিরবিহীন। বহু বাগানের উৎপাদন একধাক্কায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গিয়েছে। টিআরএ তাদের রিপোর্টে মে মাসের উৎপাদন বৃদ্ধির যে তথ্য জানিয়েছে, তা থেকে বাস্তাবচিত্র কিন্তু আলাদা। কিছু বাগানকে ধরে ওই তথ্য। কাগজে-কলমে বিষয়টি হয়তো ঠিক।’ একইসঙ্গে তিনি এও জানিয়েছেন, গতবার মে মাসের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ ছিল। জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘পোকা দমনে যে সমস্ত অনুমোদিত রাসায়নিক রয়েছে সেগুলি এখন আর কাজ করছে না। ফলে সমস্যা দিন-দিন জটিল আকার ধারণ করছে।’