রহিদুল ইসলাম, মেটেলি: গরমের মরশুম আসন্ন। তার আগে মাটিয়ালি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা পানীয় জলের সংকটে (Drinking Water Problem) জেরবার। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের (পিএইচই) প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ হলেও এখনও সব জায়গায় ট্যাপকলের জল পৌঁছায় না বলে অভিযোগ। এছাড়া বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের লাইনের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। সব মিলিয়ে তাই জলের সমস্যায় মাটিয়ালি ব্লকের বিভিন্ন চা বাগান ও গ্রাম্য এলাকার মানুষের মধ্যে তুমুল ক্ষোভ রয়েছে। ব্লকের ইনগু চা বাগান, কিলকোট, মঙ্গলবাড়ি টিক লাইন, লামাপাড়া, ছাওয়াফেলি ডিপু লাইন, খরিয়ার বন্দর, বিধাননগরের মাকড়াপাড়া, দক্ষিণ ও উত্তর ধূপঝোরার বেশ কিছু এলাকায় তীব্র জলসংকট রয়েছে। মাটিয়ালির বিডিও অভিনন্দন ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে মাটিয়ালি ব্লকের জলসমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।’
বাসিন্দারা অবশ্য প্রশাসনিক আশ্বাসে সেভাবে ভরসা করতে পারছেন না। কিলকোট চা বাগানের এক শ্রমিক নেতা প্রকাশ নায়েক বলেন, ‘পিএইচই-র দুটি জলপ্রকল্প চালু হলেও কিলকোট চা বাগানের ৮, ৯ এবং ১১ নম্বর লাইন, প্রজা লাইন, বাসা লাইন এলাকায় ঠিকমতো জল পৌঁছায় না। ফলে জনগণের সমস্যা এখানে প্রকট। প্রশাসনের বিষয়টি দেখা উচিত।’ বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাকড়াপাড়া এলাকার মইরণ বেওয়া নামে এক মহিলার কথায়, ‘আমাদের এলাকায় জলের জন্য এখনও কোনও পাইপ বসেনি। সারাদিনের নানা কাজের জন্য পাশের কূর্তি নদীই ভরসা।’ দক্ষিণ ধূপঝোরা হলদিয়াপাড়া এলাকার ঝর্ণা বেগমেরও একই সমস্যা। তাঁর বাড়িতে ট্যাপকল নেই। এমনকি রাস্তার পাশের কলগুলিতেও গত ২০ দিন ধরে জল না আসায় তাঁকে বর্তমানে জল কিনে খেতে হচ্ছে। মঙ্গলবাড়ি লামাপাড়ার মিনা লামার মতো অনেকে আবার শুখা মরশুমে ট্যাংকারে করে জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের মেটেলির ব্লক সভানেত্রী তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্যা স্নোমিতা কালান্দি বলেন, ‘ব্লকের বিভিন্ন চা বাগান ও গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। এছাড়া জেলা পরিষদের তরফে সমস্যা মেটাতে বিভিন্ন এলাকায় ওয়াটার এটিএম বসানোর প্রস্তাবও করা হয়েছে। সমস্যা মেটাতে পিএইচই’র দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।’ গরমের মরশুমে কোথাও পানীয় জলের অভাব দেখা দিলে দ্রুত যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই বিষয়েও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। মাটিয়ালি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হোসেন হাবিবুল হাসান বললেন, ‘পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে এমন বহু এলাকা আমি পরিদর্শন করেছি। পিএইচই সমস্যা মেটাতে কাজ করছে। প্রশাসনিক স্তর থেকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’