অরুণ ঝাঁ, ইসলামপুর: আসন্ন দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে ইসলামপুর পুলিশ জেলার (Islampur) বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ মদের কারবারিরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে বাংলা-বিহার সীমানায় নিরাপত্তা পুলিশের কাছেও একটা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সম্প্রতি ইসলামপুর জেলা পুলিশের অভিযানে ডালখোলা পুর এলাকায় বিপুল পরিমাণে অবৈধ মদ ও ইসলামপুর থানা এলাকায় কয়েক লক্ষ টাকার ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়। তারপর থেকে পুলিশকর্মীদের কনফিডেন্স লেভেল অনেকটাই চাঙ্গা রয়েছে বলে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
বিহারে মদ নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে ইসলামপুর করিডর দিয়ে কোটি টাকার মদ সে রাজ্যে পাচার হয়। বিষয়টি সে রাজ্যের পুলিশের জন্য যেমন মাথাব্যথার কারণ, তেমনই উৎসবের মরশুমে বিহার থেকে বাংলায় ড্রাগস পাচার রোধ এ রাজ্যের পুলিশের কাছেও অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে দোলের আগে দু’রাজ্যের পুলিশ সীমানায় নাকা চেকিংয়ে জোর দিচ্ছে।
ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, ‘দোল উৎসবের সময় অবৈধ মদের কারবারিদের বাড়বাড়ন্তের বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। তাই দু’রাজ্যের সীমানায় নাকা চেকিং বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আমরা বিভিন্ন সোর্স মারফত নজরদারি শুরু করেছি। সঙ্গে বিহার পুলিশের শীর্ষকর্তা এবং থানা স্তরে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’
পুলিশ সুপার এমন দাবি করলেও ইসলামপুর মহকুমায় ভেজাল মদের পাচারকারীরা যে এখনও বেশ সক্রিয় তা মাঝেমধ্যেই মাদক দ্রব্য উদ্ধারের ঘটনা থেকেই বোঝা যায়। বিশেষ করে ইসলামপুর পুলিশ জেলার ডালখোলা, পূর্ণিয়া মোড়, গোয়ালপোখর থানার পাঞ্জিপাড়া ভেজাল মদের কারবারিদের জন্য বেশ সেফ জায়গা বলে পরিচিত।
এসব এলাকার বেকারদের একাংশ রাতারাতি বড়লোক হওয়ার টোপে এরাজ্যের দামে মদ কিনে বিহারে তিন-চারগুণ বেশি দামে পাচার করার কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তির কথায়, ‘অনেক সময় এরাজ্য থেকে মদ পৌঁছে দেওয়ার পরিবর্তে সে রাজ্য থেকে ব্রাউন সুগার নিয়ে আসা হয়।’
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভেজাল মদ কারবারের আড়ালে রাজনৈতিক দাদাদের যোগসাজশ রয়েছে বলে খবর। ইসলামপুর থানার মাদারিপুর এলাকায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বছর তিনেক আগে ভেজাল মদ তৈরির কারখানার পর্দা ফাঁস যার অন্যতম উদাহরণ। এই কারবারের উঁচুতলার এক কিংপিনের কথায়, ‘বখরা ঠিকসময় দাদাদের টেবিলে পৌঁছে গেলেই মদ পাচারে আর কোনও বাধা থাকে না।’
এখন দেখার দোলের আগে অবৈধ মদের কারবারিদের লম্বা হাত, আর মোটা টাকার খামকে তোয়াক্কা না করে পুলিশ কতটা কড়া হাতে মদ কারবারিদের দমন করতে পারে।