বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: গতবছরে মালদা, এবারে রায়গঞ্জ। মাদক পাচারে আবারও সামনে এল মহিলা সংযোগ। উত্তর-পূর্বের সঙ্গে মাদক পাচারের সম্ভাবনা আরও দৃঢ় হচ্ছে এই ঘটনায়। বুধবার রাতে ১৬ কেজি গঁাজা বাজেয়াপ্ত করল রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে অনিমা গোস্বামী (৩৬) নামে এক দুষ্কৃতী। বাড়ি কোচবিহার জেলার কোতুয়ালি থানার এক নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামাপল্লি। ধৃতের বাবার বাড়ি অসমের গুয়াহাটিতে।
অভিযোগ, বুধবার সকাল ৮:৩০ টায় দুই তরুণকে সঙ্গে নিয়ে দুই ব্যাগ ভর্তি গাঁজা নিয়ে শিলিগুড়িতে আসেন ওই মহিলা। সেখান থেকে বাস ধরে রায়গঞ্জে আসেন। শহরের সুদর্শনপুর এলাকায় একটি হোটেলে খাওয়াদাওয়ার পর দু’ঘণ্টা বিশ্রাম নেন। আনুমানিক রাত সাড়ে নটায় ওই দূরপাল্লার বেসরকারি বাসে ওই দুই তরুণকে সঙ্গে নিয়ে মালদার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে পুলিশ গাড়ি তল্লাশি শুরু করলে ওই মহিলাকে গাঁজা সহ গ্রেপ্তার করে। রহস্যজনকভাবে সেই সময় ওই দুই তরুণ পুলিশের ফাঁক গলে পালিয়ে যায়।
এদিন রাত ১১ টায় ঘটনাস্থলে আসে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশি ক্যামেরাম্যান। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে রাত ১টা বেজে যায়। এরপর ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করে রায়গঞ্জ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে রায়গঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট সেশন জজ কোর্টে তোলা হলে বিচারক তাকে ৬ দিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশি জেরায় ওই মহিলা জানিয়েছে, ‘মণিপুর থেকে ওই গাঁজা কালিয়াচকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আমার সঙ্গে দু’জন ছেলে ছিল। তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তবে আমি যার অধীনে কাজ করি সেই ড্রাগ মাফিয়ার ফোন নম্বর পুলিশের হাতে তুলে দেই।’ পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা ড্রাগ পাচারকারী দীর্ঘদিন ধরে এই মাদকপাচারের সঙ্গে যুক্ত। রায়গঞ্জ জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘ধৃত ওই মহিলার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে বিচারক ৬ দিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ধৃত মহিলার কাছ থেকে ১৬ কেজি গাঁজা বাজেয়াপ্ত হয়েছে।’
ধৃতের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে একাধিক তথ্য পেয়েছে পুলিশ। যদিও এই মুহূর্তে কোনও নাম প্রকাশ করতে নারাজ তদন্তকারী পুলিশের দল।
তবে ওই মহিলা পাচারকারী গ্রেপ্তার হতেই আদালতে হাজির ধৃতের দুই বান্ধবী। অভিযোগ, তারাও মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত। খবর যায় রায়গঞ্জ থানায়। পুলিশ আদালত আসছে এই খবর চাউর হতেই ঘটনাস্থল থেকে উধাও হয়ে যায় ওই দুই মহিলা। ধৃত মহিলার বক্তব্য, ‘ওই দুই তরুণী আমরা বান্ধবী। আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। পুলিশের কথা শুনে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।’