সানি সরকার, শিলিগুড়ি: অষ্টমীতে কোথাও খিচুড়ি, কোথাও আবার নবমীতে খাসির মাংস। দশমীতে পান্তাভাত-কচুর শাক করা ঠিক হবে কি না, তা অবশ্য বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই। যেমনটা চিন্তায় রয়েছে বাংলাদেশের ইলিশ পাওয়া নিয়ে। তবে যাই হোক না কেন, দুর্গাপুজোর (Durga Puja) দিনগুলিতে ভ্রমণপিপাসু বাঙালিকে ভোজনরসিক রাখতে উদ্যোগে কোনও খামতি চাইছে না পর্যটন দপ্তর। কীভাবে শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে বাহারি পদে থালা সাজানো যায়, হাতে এক মাসের বেশি সময় থাকলেও তা নিয়ে উত্তরবঙ্গের লজগুলিতে শুরু হয়েছে পরিকল্পনা।
ভোরের আলো (Bhorer Alo) প্রকল্পের ম্যানেজার শান্তনু ঘোষাল বলছেন, ‘পুজোর দিনগুলিতে আমাদের এখানে অবশ্যই স্পেশাল মেনু থাকবে। যা পুজোয় বাড়তি আনন্দ দেবে।’
পর্যটন দপ্তর সূত্রে খবর, এবছরও রঙিন আলোয় সাজিয়ে তোলা হবে প্রতিটি লজ। ডেপুটি ডিরেক্টর পদমর্যাদার এক আধিকারিক বলছেন, ‘পুজোর দিনগুলি সবদিক দিয়েই সকলের কাছে স্পেশাল। তাই এসময় দপ্তরের তরফ থেকেও কিছু স্পেশালের চেষ্টা থাকে। বেড়াতে এসে সকলেই যাতে পুজোর আনন্দটা অনুভব করতে পারেন, তার জন্য পদের পরিবর্তন সহ নানা বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুজোর দিনগুলিতে বন্ধ থাকছে কালিম্পংয়ের (Kalimpong) তাসিডিং। ১ ডিসেম্বর পর্যটন কেন্দ্রটি খোলার সম্ভাবনা। মেরামতির জন্য পুজোর মুখে ১৫ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মর্গান হাউস। তবে খোলা থাকছে মর্গান কটেজ। তাসিডিং এবং মর্গান হাউস বন্ধ থাকলেও ‘চিকেন রোস্ট উইথ বয়েল ভেজ’ এবং ‘ক্যারামেল কাস্টার্ড’-এর কোনও অভাব হবে না কটেজে। যেহেতু পদ দুটি এখানকার স্পেশাল, তাই পুজোর দিনগুলিতে দুটি পদকেই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পদে বিশেষ নজর রাখছে সমতলও। বেসরকারি লজ-রেস্তোরাঁর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুজোর সময়ের জন্য বিশেষ মেনুতে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের পর্যটন দপ্তর।
কিন্তু বিশেষ নজরে কী থাকছে? সপ্তমী থেকে দশমী, দিন অনুসারে পদ সাজানো হবে বলে পর্যটন দপ্তর সূত্র খবর। যেমন অষ্টমীতে খিচুড়ি, লাবড়া, চাটনি, পায়েস থাকছে কোথাও। কোথাও আবার পায়েসের পরিবর্তে দই-মিষ্টি। নবমীতে প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই খাসির মাংস।
একটি লজের ম্যানেজার বলছেন, ‘ইচ্ছে ছিল ইলিশের কিছু পদ উল্লেখ করে দপ্তরে প্রস্তাব পাঠাব। কিন্তু তেমন ইলিশ কোথায় পাব? তাই এবছর ইলিশের ভাবনাটা দূরেই রাখছি।’
বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির জন্য সীমান্ত পেরিয়ে এরাজ্যে ইলিশ না আসাতেই যে দূরে রাখার ভাবনা, তা স্পষ্ট হয়েছে বিভিন্ন লজে খোঁজ নিয়ে। ইলিশ বাজারে নেই তা নয়। কিন্তু বাজারি ইলিশ খাইয়ে মান খারাপ করতে নারাজ সরকারি লজগুলি।