কলকাতা: গোয়া তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সুখের মুহূর্ত তৈরি করে দিলেও শেষপর্যন্ত এদেশে অস্কার ব্রুজোঁর কোচিংয়ের দ্বিতীয় ইনিংসকে সুখকর হতে দিল না। একইসঙ্গে রবি-রাতে গোয়ার সমুদ্রেই সম্ভবত সলিলসমাধি হল সুপার সিক্সে যাওয়ার যাবতীয় আশার।
টানা চার ম্যাচে জয়হীন ইস্টবেঙ্গল। যার মধ্যে রয়েছে পরপর তিন ম্যাচে হার। দল খারাপ খেলছে না। কিন্তু গোল খাওয়াও থামে না, স্ট্রাইকাররাও গোল করতে পারেন না। দুইয়ের যুগলবন্দিতে কার্যত সুপার সিক্সের আশা যে শেষ সেটা স্বীকার করেই নেন লাল-হলুদ কোচ, ‘খুব কঠিন হয়ে গেল। ম্যাচের আগেই বলেছিলাম, টানা তিন ম্যাচ না জিতলে সম্ভব নয়। তাই এখন সুপার সিক্সে যাওয়ার আশাকে অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা বলা যায়।’ একইসঙ্গে তিনি অবশ্য বলেছেন, ‘আমার দল যেভাবে খেলছে তাতে ব্যাপারটা কঠিন নয়। কিন্তু আরও কার্যকরী হতে হবে। একটা সেট পিসে প্রতিপক্ষের সব থেকে কম উচ্চতার ফুটবলার এসে আমাদের গোলরক্ষক আর সেন্টার ব্যাকের মাঝখান দিয়ে গোল করে চলে গেল, এটা ঠিক না। সারা ম্যাচে আমরা ২৮টা ক্রস করে একটাও গোল পাইনি। ম্যাচ পরিসংখ্যান বলছে, আমরা ১৫টা সুযোগ তৈরি করেছি। তা সত্ত্বেও আমাদের স্ট্রাইকাররা গোল করতে পারেনি। কারণ ওদের ডিফেন্স নিজেদের বক্সে অনেক বেশি জমাট ছিল।’ এফসি গোয়া যে ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে নিজেদের সবথেকে খারাপ পারফরমেন্স করেছে একথা নিজেই জানান তাদের কোচ মানোলো মার্কুয়েজ। তা সত্ত্বেও ১৩ মিনিটে খাওয়া গোলের জবাব দিতে পারেননি দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোসরা। ব্রুজোঁও তাঁর দলের স্ট্রাইকিং লাইনের ব্যর্থতার কথাই বলছেন, ‘এফসি গোয়া জিতেছে ওদের অভিনন্দন। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে বারবার আমরা খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়েও গোল করতে পারিনি। ম্যাচের ফয়সালা হয় বক্সের মধ্যে। এদিনও সেটাই হল।’
ডিফেন্সে একাধিক চোট-আঘাত সমস্যা বাড়াচ্ছে। আনোয়ার আলির পায়ের পাতায় চিড় ধরেছে। প্রভাত লাকড়া-মহম্মদ রাকিপ ছাড়াও হঠাৎই রহস্যজনক চোটের কবলে হেক্টর ইউস্তেও। ফলে অনভ্যস্ত জায়গায় খেলছেন অনেকেই। সবার চোট সারানোর অপেক্ষায় এখন ব্রুজোঁ। বলছেন, ‘যখন চোট সারিয়ে সবাই ফিরবে, তখন আমরা নিশ্চয় ভালো খেলব। কীভাবে দল নামিয়েছিলাম সেটা সবাই দেখেছে। তাও গোয়াকে ভালোই আটকেছি আমরা। কিন্তু গোলটা হয়ে যাওয়ায় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তারপর এতটা সময় ধরে আমরা গোল করতে পারিনি।’ এত খারাপের মধ্যেও ইতিবাচক দিক হল, প্রথম ম্যাচে রিচার্ড সেলিস যথেষ্ট ভালো খেলেন গোয়ার বিরুদ্ধে। ম্যাচে তাঁর এবং নাওরেম মহেশ সিংয়ের পায়ের পেশিতে টান ধরলেও গুরুতর নয় বলে জানা গেছে। ব্রুজোঁর আশা, ‘সব ফুটবলার ফিট হয়ে গেলে আশা করা যায় আমরা আবার ভালো ফুটবল খেলতে পারব।’ কোচ-ফুটবলাররা আশাবাদী হলেও অবশ্য সমর্থকদের ক্রমশ হতাশাই গ্রাস করছে। আর কবে দল জিতবে, এটাই এখন তাঁদের প্রশ্ন।