উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ লটারি কেটে নয়, কোটি কোটি টাকায় পুরস্কার কিনেছেন গোরুপাচার কাণ্ডে জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। আর এভাবেই কালো টাকা সাদা করেছেন বীরভূমের কেষ্ট। বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে জমা পড়া তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিটে এমনটাই দাবি করেছে ইডি।
আদালতে জমা পড়া তৃতীয় চার্জশিটে ইডি দাবি করেছে, লটারি কেটে নয়, লটারির পুরস্কারপ্রাপকদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে টিকিট কিনে নিতেন বীরভূমের কেষ্ট। অনুব্রত এবং তাঁর কন্যা সুকন্যা আসল পুরস্কারপ্রাপকদের কাছ থেকে অনেকগুলি লটারির টিকিট কিনে নিয়েছিলেন। যে লটারিগুলিতে উঠেছিল ১ কোটি টাকার প্রথম পুরস্কার। এ ভাবেই ২ কোটি টাকার পুরস্কার পাওয়ার আড়ালে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, বোলপুরের লটারি বিক্রয়কেন্দ্র গাঙ্গুলি লটারি এজেন্সির সঙ্গে অনুব্রত বোঝাপড়া করে নিয়েছিলেন। বোঝাপড়া অনুযায়ী, তার বিক্রিত টিকিটে কেউ পুরস্কার পেলেই লটারি বিক্রয়কেন্দ্র থেকে সেই খবর পৌঁছে যেত অনুব্রতের কাছে। অনুব্রত সেই লটারি প্রাপকদের কাছ থেকে মোটা টাকায় তা কিনে নিতেন। লটারির খবর দেওয়ার জন্য বিক্রয়কেন্দ্রটি পেতো অতিরিক্ত কমিশন।
চার্জশিটে ইডির দাবি, অনুব্রত জেরায় জানিয়েছেন, তিনি এবং কন্যা সুকন্যা মোট ১০-১২ বার লটারি জিতেছেন। তার মধ্যে ২০১৮ সাল থেকে ৫-৬ বার লটারিতে পুরস্কার জিতেছে তাঁর পরিবার। অনুব্রত ও তাঁর কন্যা সুকন্যা ৫০ লক্ষ টাকার দু’টি এবং ১ কোটি টাকা পুরস্কারমূল্যের একটি লটারির টিকিট কিনে নিয়েছিলেন। এ ছাড়াও ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ সালের মধ্যে সুকন্যা ৭৫ লক্ষ ৫৩ হাজার এবং ৫৬ লক্ষ টাকা লটারিতে জিতেছেন বলে ইডির দাবি।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুব্রত এই লটারির কারবার করেছেন তারই ঘনিষ্ঠ বোলপুর পুরসভার একা কাউন্সিলার বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে। এ ছাড়াও অনুব্রতের গৃহপরিচারককেও এ ভাবেই তিনি চেনেন। তিনি নিজে তিন বার অনুব্রতকে পুরস্কার জেতানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে দু’টি ছিল ৫০ লক্ষ পুরস্কারমূল্যের এবং একটি ১ কোটি টাকার।
প্রসঙ্গত, ইডি লটারির দোকানের মালিক রামপ্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে বাপি গঙ্গোপাধ্যায়কে জেরা করে জানতে পারে যে, অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ বিশ্বজ্যোতিকে তিনি চেনেন বোলপুর পুরসভার একজন কাউন্সিলর হিসাবে। লটারির আসল পুরস্কারপ্রাপকদের হাতে নগদ টাকা তুলে দিতেন, বিনিময়ে নিয়ে নিতেন পুরস্কার জেতা লটারির টিকিটটি। এ ছাড়াও অনুব্রতের গৃহপরিচারকও তিন বার অনুব্রতকে পুরস্কার জেতানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে দু’টি ছিল ৫০ লক্ষ পুরস্কারমূল্যের এবং একটি ১ কোটি টাকার।