বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫

Egiye Bangla | দু’বছরেও আপডেট হয়নি সরকারি ওয়েবসাইট, তথ্যে পিছিয়ে ‘এগিয়ে বাংলা’

শেষ আপডেট:

সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস পড়েছেন প্রবল বিপাকে। ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতে তাঁর বৃদ্ধা মাসি থাকেন। সেই মাসির ওয়ারিশনামার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। বৃদ্ধা বিষয়টি তেমন জানেন না, তাই বিশ্বজিৎই ফোনে প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। সেজন্য দ্বারস্থ হন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের ‘এগিয়ে বাংলা’ ওয়েবসাইটের। সেখানে প্রধানের নম্বর জোগাড় করার চেষ্টা করেন। এখানেই যত গণ্ডগোল বাঁধে। ডাঙ্গা পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধানের নাম অপর্ণা বর্মন এবং উপপ্রধানের কৌশিক চৌধুরী। ওয়েবসাইটটিতে এই দুই জনপ্রতিনিধির ফোন নম্বর থাকার কথা। কথা থাকলেও সেরকমটি হয়নি।

কারণ তথ্যে পিছিয়ে ‘এগিয়ে বাংলা’ ওয়েবসাইট। ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের জায়গায় নাম রয়েছে মল্লিকা কর্মকার সূত্রধর। যিনি ২০১৮ সালে প্রধানের পদে বসেছিলেন। ওয়েবসাইটের তথ্যের এমন হাল দেখে অবাক হয়েছেন বিশ্বজিৎ। ঘটনা জানাজানি হতে ছড়িয়েছে বিভ্রান্তিও। জেলা প্রশাসনের এমন উদাসীনতার কারণ কী, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।

২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন। তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় দুটো বছর। ২০২৩ সালের নির্বাচিত নতুন বোর্ডের বদলে ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পুরোনো বোর্ডের প্রধান,  উপপ্রধানদের নাম আজও জ্বলজ্বল করছে। রয়েছে ফোন নম্বরও। জেলা প্রশাসনের এই উদাসীনতায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিশ্বজিৎ দাসদের মতো সাধারণ মানুষকে। বিশ্বজিৎ বললেন, ‘সপ্তাহখানেক আগে মাসির জন্য ওই ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রধানের ফোন নম্বর খুঁজি। কিন্তু সেখানে তো পুরোনো প্রধানেরই নম্বর রয়ে গিয়েছে। কি বিপত্তি বলুন তো!’

বর্তমান ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় মোবাইলের মাধ্যমে প্রচুর মানুষ তাঁদের প্রয়োজনীয় কাজ সারেন। কর্মসূত্রে প্রচুর মানুষ ভিনরাজ্য বা ভিনদেশে থাকেন। বাইরে থাকাকালীন কোনও কাজের জন্য স্থানীয় প্রধান কিংবা উপপ্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে সরকারি ওয়েবসাইটগুলি তাঁদের বিশেষ সহায়ক হয়ে ওঠে। কিন্তু সেখানে তথ্যই যদি ভুল থাকে, তাহলে তো সমস্যা মেটার বদলে বেড়ে যায়।

সরকারি কাজে এমন উদাসীনতা নিয়ে সরব জনপ্রতিনিধিরাও। চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রঞ্জন মাহাতোর কথায়, ‘আমায় কেউ এ বিষয়ে কোনওদিন বলেনি। আমিও খেয়াল করিনি। পঞ্চায়েত ভোট তো অনেকদিন আগেই মিটে গিয়েছে। তাহলে এতদিন ধরে ওয়েবসাইটটিতে পুরোনো বোর্ডের সদস্যদের নাম থেকে গিয়েছে কেন? সবটা আপডেট করা হয়নি কেন?’ দ্রুত তালিকা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণার গলায় আশ্বাসের সুর। তাঁর বক্তব্য, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। ওয়েবসাইট দ্রুত আপডেট করা হবে।’

Sandip Sarkar
Sandip Sarkarhttps://uttarbangasambad.com/
Sandip Sarkar Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 22 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.

Share post:

Popular

More like this
Related

Malda | বিয়ে হয়েছে বছর খানেক! রূপশ্রী প্রকল্পে একাধিক ভুয়ো আবেদনকারীকে ধরলেন আধিকারিকরা

হরিশ্চন্দ্রপুর: কারও বিয়ে হয়ে গিয়েছে এক বছর, কারও বা...

Karandighi | মিড-ডে মিলের খাতায় ‘ভূতুড়ে’ পড়ুয়ার হদিস 

বরুণকুমার মজুমদার, করণদিঘি: ‘ভূতুড়ে’ ছাত্রের সন্ধান মিলল করণদিঘি (Karandighi)...

Mainaguri | রমরমিয়ে সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইলের কারবার   

শুভাশিস বসাক, ধূপগুড়ি: পুলিশের সচেতনতামূলক বার্তা থাকা সত্ত্বেও নথি...

Uttar Dinajpur | হাজিরা খাতায় সইয়ে বাধা, প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ডিআই-কে নালিশ  

দীপঙ্কর মিত্র ও অনির্বাণ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ: হস্টেলের...