নয়াদিল্লি: বিরোধীদের কোনও অভিযোগকেই মানল না নির্বাচন কমিশন। প্রথমে লোকসভা ভোট, তারপর হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে কারচুপির অভিযোগের জেরে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করে ব্যালট পেপারে ভোট করানোর দাবি তুলেছিল কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া জোটের একাধিক শরিকদল। কিন্তু মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট জারি করতে গিয়ে সেই দাবি নস্যাৎ করে দেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) রাজীব কুমার।
ইভিএম বাদ দেওয়ার যে দাবি উঠেছিল তাতে টেসলা কর্তা এলন মাস্কও সায় দিয়েছিলেন। গতবছর বিরোধীদের পাশাপাশি মাস্কও ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সিইসি বলেন, ‘ভ্রান্ত ধারণার ভিত্তিতে ওই ন্যারেটিভটি তৈরি করা হয়েছে। আমাদের নির্বাচন চলার সময় একজন আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি বিশারদ বলেছিলেন, ইভিএম হ্যাক করা সম্ভব। আমেরিকায় ইভিএম নেই। ওই মন্তব্য এখানেও বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। অথচ পরে ওই বিশেষজ্ঞ স্বয়ং বলেছিলেন, ভারতে একদিনে গণনা শেষ হয়ে যায়। অথচ আমেরিকায় তা করতে এক মাস সময় লেগে যায়। আমাদের এখানে যে আখ্যান কাজে লাগে আমরা শুধুমাত্র সেটাকেই মেনে চলি।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ক্যালিফোর্নিয়ায় ভোট গণনা করতে দীর্ঘ সময় লাগায় তা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মাস্ক। তিনি বলেছিলেন ভারতে একদিনে গণনা হয়ে যায়। অথচ ক্যালিফোর্নিয়ায় তা করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। মানুষ অথবা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করে ইভিএম হ্যাক করা যায় বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইভিএম মোটেই হ্যাক করা যায় না। কারচুপির প্রতিটি অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তের পর খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এই প্রযুক্তি স্বাধীন এবং অবাধ নির্বাচনের নীতি বজায় রেখেছে। ৪২বার আলাদা আলাদাভাবে বিচারবিভাগ ইভিএমের ওপর আস্থা বজায় রেখেছিল। এই যন্ত্রগুলি বছরের পর বছর ধরে প্রযুক্তির বিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং এটা জাতীয় গর্বের বিষয়।’
ইভিএমে কারচুপি সংক্রান্ত যত অভিযোগ উঠেছে সেই সবকে ভিত্তিহীন বলার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতাকে সর্বদা অগ্রাধিকার দেয় বলেও জানান সিইসি। দিল্লির চূড়ান্ত ভোটার তালিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল আপ, কংগ্রেস। আপের সঞ্জয় সিং বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে দিল্লি বিধানসভার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০ হাজার ভোটারের নাম কাটানোর অভিযোগ জমা পড়েছে। এর নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি। কারণ, মহারাষ্ট্রের মতো দিল্লিতেও ভোটারদের নাম কাটিয়ে নতুন ভোটারের নাম সংযোজন এবং স্থানান্তকরণ ঘটিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি। যদিও সেই অভিযোগ নস্যাৎ করে রাজীব কুমার বলেন, ‘ভোটার তালিকা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সামনে রেখেই প্রস্তুত করা হয়। তাদের আপত্তি জানানোরও সুযোগ থাকে। ফর্ম-৭ পূরণ না করলে কোনওভাবেই নাম বাদ দেওয়া যায় না। তাই ভোটার তালিকায় কারচুপির কোনও জায়গা নেই।’