রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি (Siliguri) শহরের ১৯টি ওয়ার্ডে ভূগর্ভস্থ কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পরিষেবার কাজ শেষ হতে আরও দেড় বছর সময় প্রয়োজন। আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা নিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। অর্থাৎ শুধু এই বর্ষা নয়, আগামী বছরের বর্ষাতেও শহরবাসীকে ভুগতে হবে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের সমীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। অর্থাৎ শহরের বাকি ২৮টি ওয়ার্ডে ভূগর্ভস্থ কেবল পাততে ডিটেইলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজ শুরু হবে দ্রুত।
শুক্রবার সকালে পুরনিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় ভূগর্ভস্থ কেবল পাতার কাজ খতিয়ে দেখেন বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আধিকারিকরা। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, ওয়ার্ড কাউন্সিলার মিলি সিনহার উপস্থিতিতে সংস্থার জোনাল ম্যানেজার শৌভিক বেরা, শিলিগুড়ির ডিভিশনাল ম্যানেজার (শহর) শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকা পরিদর্শন করেন। কাউন্সিলারের বক্তব্য, ‘বিদ্যুতের কেবল পাততে গিয়ে পানীয় জলের পাইপলাইন ফাটিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে ওয়ার্ডের বহু বাড়িতে পানীয় জল সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। এসবের দ্রুত মেরামতি প্রয়োজন। আমরা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আধিকারিকদের যত্ন নিয়ে কাজ করার আবেদন জানিয়েছি।’
গত বছরের ডিসেম্বরে শিলিগুড়িতে বিদ্যুতের ভূগর্ভস্থ কেবল পাতা শুরু হয়। ২৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি ওয়ার্ডে মোট ২২০ কিলোমিটার রাস্তায় এই ভূগর্ভস্থ কেবল পাতা হচ্ছে। বেশিরভাগ এলাকাতেই ৩৩ হাজার এবং ১১ হাজার ভোল্টের হাই টেনশন বিদ্যুৎ কেবল মাটির তলা দিয়ে যাবে। ফলে রাস্তায় বসানো খুঁটিতে শুধুমাত্র লো টেনশন লাইনের তার থাকবে। হিলকার্ট, বিধান ও সেবক রোডের পাশাপাশি কলেজপাড়া, হাকিমপাড়া, বাঘা যতীন পার্ক এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবার সমস্ত ধরনের কেবল মাটির তলা দিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ এই সমস্ত জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি থাকছে না। সেখানে আলাদাভাবে পথবাতির জন্য বিশেষ খুঁটি পোঁতা হবে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তারা বলছেন, ‘ভূগর্ভস্থ কেবল পাতা শেষ হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা অনেকটাই উন্নত হবে।’
তবে, যে সমস্ত ওয়ার্ডে কেবল পাতার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে, বর্ষা শুরু হতেই সেখানকার পথের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। জলকাদায় মাখামাখি রাস্তায় চলতে গিয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আটকাচ্ছে সাইকেল, বাইক ও গাড়ির চাকা। বিদ্যুৎ সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একাধিক ওয়ার্ডে কেবল পাতার কাজ শেষ হওয়ার পর বাকি কাজগুলো হচ্ছে। সেটা হয়ে গেলেই পুরনিগমকে চিঠি দিয়ে রাস্তা সংস্কারের জন্য জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে, ১৯টি ওয়ার্ডের পুরো কাজ শেষ হতে আগামী বছরের ডিসেম্বর অবধি সময় প্রয়োজন।