নাগরাকাটাঃ হাতির টিফিন চুরি! গল্প হলেও সত্যি। শনিবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল নাগরাকাটার বামনডাঙ্গা চা বাগানের শ্রমিকরা। এদিন সকালে বাগানের ডুমুরঝোড়া সেকশনে কাঁচা পাতা তুলছিলেন শ্রমিকরা। এমন সময় সেখানে হাজির একটি হাতি। স্বাভাবিক ভাবেই ওই দৃশ্য দেখে সবাই দে ছুট। এরপরের কাহিনী তো নজিরবিহীন। দুপুরের টিফিনের জন্য নিয়ে আসা একে একে ৮৪ জনের খাবার খেয়ে তবেই এলাকা ছাড়লো মাকনা। টিফিন বাক্সে করে চা শ্রমিকদের খাবারগুলি বাগানের ছায়া গাছে সার দিয়ে ঝোলানো ছিল।
শনিবার সকাল ১০ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে নাগরাকাটার বামনডাঙ্গা চা বাগানের ডুমুরঝোড়া সেকশনে। হাতির এমন ‘টিফিন চুরি’ দেখে হতভম্ব শ্রমিকরা। কৈলাশ গোপ নামে এক শ্রমিক নেতা বলেন, এখানেই জন্ম- কম্ম। বলতে পারেন হাতির সঙ্গেই আমাদের ঘর। শ্রমিক আবাস, দোকানপাট ভাঙচুর করে মজুত থাকা খাবার সাবাড় করে যাওয়া বামনডাঙ্গায় নিত্য দিনের ঘটনা। তা বলে কাজের স্থানে হানা দিয়ে এমন চুরি! কিছুক্ষণ মাথা চুলকে নিয়ে তার মন্তব্য, না- এরকম এর আগে কস্মিনকালেও দেখিনি।
সুমিত্রা ওরাওঁ নামে এক শ্রমিক বলছেন, ভোরে উঠে দুটো চাল ফুটিয়ে টিফিনে করে নিয়ে এসেছিলাম৷ সঙ্গে ছিল আলু ভাজা। দুপুরে কাজের ফাঁকে একটু খেয়ে নিতাম। সবই হাতির পেটে গেলো। সুকুরমুণি ওরাওঁ নামে এক শ্রমিক বলছেন, টিফিনে ছিল রুটি আর ঢেকি শাক। হাতি যে এসবও খায় আগে কি আর জানতাম!
এদিন মাকনাটি পাশের ডায়না জঙ্গল থেকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা পেরিয়ে বাগানে যেখানে কাজ হচ্ছিল সেখানে হানা দেয়। দুলকি চালে এগিয়ে আসা হাতি দেখে সঙ্গে সঙ্গে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে হুলুস্থুল বেঁধে যায়। প্রায় দু ঘন্টা সেখানে কাজ বন্ধ থাকে। পরে শ্রমিকরাই প্রতিরোধ তৈরি করলে হাতিটি অন্য পাশের গরুমারার জঙ্গলের দিকে চলে যায়। তার আগেই অবশ্য ঘটে গেছে অভিনব টিফিন কান্ড। বন দপ্তরের খুনিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার সজল দে বলেন, হাতিটির গতিবিধির প্রতি সতর্ক নজর রেখে চলা হচ্ছে।