নয়াদিল্লি: বদলে যাচ্ছে ইতিহাস। প্রায় দু দশক পরে নাম পরিবর্তন হতে চলেছে বিরোধী জোট হিসেবে পরিচিত ‘ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স’ বা ইউপিএ-র৷ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বেঙ্গালুরু সামিটের বিরোধী বৈঠকেই এই নাম পরিবর্তন এবং নতুন নাম ঘোষণা করা হবে৷
প্রসঙ্গত ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল এই ইউপিএ জোট যেখানে মোর্চার ব্যাটন হাতে নিয়েছিল জোটের প্রধান দল কংগ্রেস৷ পরিবর্তিত সময়ে, গেরুয়া শক্তির আগ্রাসনে কংগ্রেসের একার পক্ষে কোনমতেই এনডিএ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব নয়, তা অনুধাবন করেই বিরোধী ফ্রন্টের যাবতীয় খোলনলচে পালটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল সম-মনোভাবাপন্ন বিরোধী দলগুলি। তারা বুঝেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিজেপিকে প্রতিহত করতে গেলে প্রয়োজন সার্বিক বিরোধী ঐক্যের৷ একথা মাথায় রেখেই এবার ‘ইউপিএ’- নামটিকে চিরকালের মত হিমঘরে চালান করে নতুন নাম নিয়ে পথ চলা শুরু করতে চলেছে বিরোধী জোট, যার ঘোষণা করা হবে আজ মঙ্গলবার, বেঙ্গালুরুতে৷ বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং এই প্রস্তাবে মত দিয়েছেন এবং তিনি নিজে একটি নতুন নাম মঙ্গলবারের বিরোধী বৈঠকে প্রস্তাব করতে পারেন। বস্তুত, অতীতের যাবতীয় স্মৃতি মুছে নতুন নাম আঁকড়ে মোদী সরকারকে উত্খাত করার সংকল্প নিয়ে পথ চলা শুরু করবে বিরোধী জোট৷ তবে এই প্রসঙ্গে কেউই মুখ খুলতে নারাজ৷ যা জানানো হবে তা বিরোধী বৈঠকের পরেই ৷
উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরুর তাজ ওয়েস্ট এন্ড হোটেলে মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিলেন সমমনোভাবাপন্ন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নেতা-নেত্রীরা৷ সেখানেই স্থির হয়েছে আজ মঙ্গলবার তাঁরা সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করবেন৷ এই মর্মে তৈরি করা হতে পারে একটি স্টিয়ারিং কমিটি এবং দেশের রাজধানীতে স্থাপন করা হতে পারে একটি কার্যালয়৷ এর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকসভা আসনে বিরোধীদের আসন বিন্যাস কেমন হবে তা নিয়েও একপ্রস্থ আলোচনা করা হতে পারে মঙ্গলবার৷ বিরোধী শিবির সূত্রে দাবি করা হয়েছে আসন বিন্যাসে জোর দেওয়া হবে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত ‘একের বিরুদ্ধে এক’ ফর্মুলা নিয়ে৷
এ ক্ষেত্রে বিশেষ উল্লেখ্যনীয়, বেঙ্গালুরুতে বিরোধী বৈঠক উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় প্রায় দু বছর পরে দেখা হয়েছে সনিয়া গান্ধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ মাঝের দু বছরে গেছে অনেক রাজনৈতিক উত্থান-পতন৷ দেশের সংবাদ মাধ্যমের একাংশে তীব্র জল্পনাও রটেছে সনিয়া-মমতা দুজনের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক নাকি নেমে গেছে তলানিতে৷ এই আবহে সোমবার কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে মুখোমুখি হয়েছেন সনিয়া গান্ধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিরোধী বৈঠকের প্রাক মুহূর্তে প্রায় ১০ মিনিট একান্তে দুজনে কথা বলেছেন, এমনটাই সূত্রের দাবি৷ এর পরে একসঙ্গে দুজনে বৈঠকে প্রবেশ করেন৷ এদিন তাঁরা দুজনেই ছিলেন বিরোধী বৈঠকের মধ্যমণি৷ শারীরিক অসুস্থতা সত্বেও কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর অনুরোধে এদিন ডিনারে যোগদান করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন৷ ডিনারে যোগ দিলেও তৃণমূল সুপ্রিমো কিছুই খাননি বলেই দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে৷