অরুণ ঝা, ইসলামপুর: ১৫ দিন কাটতে চললেও গভর্নিং বডিতে (জিবি) ইসলামপুর কলেজের (Islampur College) টিচার ইনচার্জের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি। জিবি ও কলেজের অন্দরমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, টিআইসি উজাইর আহমেদকে তাঁর পদ থেকে সরাতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। ফলে বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখে জিবি ‘জল মাপার’ কৌশল নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ টিচার্স কাউন্সিল। গোটা ঘটনায় ‘নীরব অবস্থান’ নিয়েছেন ইসলামপুরের বিধায়ক-পুত্র তথা জিবি’র সভাপতি ইমদাদ চৌধুরী। তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। যদিও জিবি’র অন্যতম সদস্য বিশ্ব মণ্ডল স্পষ্ট বলেন, ‘কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিজেদের মধ্যেই মেটানোর চেষ্টা চলছে। তবে টিআইসি’র পদত্যাগপত্র এখনও গৃহীত হয়নি।’ যাঁকে ঘিরে এত হইচই, সেই টিআইসি’র বক্তব্য, ‘পদত্যাগ নিয়ে জিবি যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।’
চলতি মাসের শুরুতেই কলেজের শিক্ষকদের একটা বড় অংশ টিআইসি’র বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। এমনকি জিবি’র সভাপতিকেও বিষয়টি জানিয়ে টিআইসিকে পদ থেকে সরানোর দাবিতে সরব হয়েছিল টিচার্স কাউন্সিল। গত ৮ এপ্রিল টিআইসি’র ঘরে দিনভর শিক্ষকদের অবস্থান চলে। সেদিন অনেক রাতে টিআইসি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তারপর ১৫ দিন কাটতে চলল। কিন্তু টিআইসি’র পদত্যাগপত্র নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি জিবি।
আপনার ইস্তফা তো এখনও গৃহীত হয়নি। ফলে বর্তমানে তো আপনিই টিআইসি’র দায়িত্বে রয়েছেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে উজাইরের মন্তব্য, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কলেজের পঠনপাঠন, আধুনিকীকরণ সহ কলেজের শৃঙ্খলার অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে শিক্ষকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমার পদত্যাগপত্র নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জিবি নেবে। ওই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
জিবি’র সদস্য বিশ্বর যুক্তি, ‘আজ একজনকে সরাব, ছয় মাস পর নতুন টিআইসি’র বিরুদ্ধে যে শিক্ষকরা সরব হবেন না, তার গ্যারান্টি কোথায়? তাছাড়া বর্তমান টিআইসি’র বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ নেই। কেউ তা প্রমাণ করতে পারলে মুহূর্তে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে।’
তাহলে টিআইসি কি উজাইরই থাকছেন?
উত্তরে বিশ্বর মন্তব্য, ‘আপাতত তিনিই পদে থাকছেন। বিশেষ কিছু কারণে জিবি’র বৈঠক ডাকা হচ্ছে না। কারণ আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে জিবি’র বৈঠক ডেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক অভিজিৎ দত্তর প্রতিক্রিয়া, ‘টিআইসি’র পদত্যাগ গৃহীত বা প্রত্যাখ্যান হবে কি না, সেবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র জিবি’র রয়েছে। তবে জিবি টিআইসি ইস্যুতে সিদ্ধান্ত বিলম্বিত করায় অচলাবস্থা ও জটিলতা বাড়ছে। কলেজের পঠনপাঠনের স্বার্থে দ্রুত সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।’