কোচবিহার: নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার প্রায় তিন মাস পরও কোচবিহার জেলা পরিষদ পথশ্রী-৩ প্রকল্পের সমস্ত রাস্তার কাজ করতে পারেনি। জেলা পরিষদ সুত্রে খবর, ২৭টি রাস্তার কাজ এখনও বাকি রয়েছে। অপরদিকে, বছর পেরিয়ে গেলেও টেন্ডারে কেউ অংশ না নেওয়ায় পরিষদ পাঁচ রাস্তার কাজ শুরুই করতে পারেনি। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার পেছনে ঠিকাদারদের গড়িমসি, সময়ে টাকা না আসা ও বৃষ্টির মতো নানা কারণ উঠে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা বর্মন বললেন, ‘কাজ করা নিয়ে কিছু এজেন্সির গড়িমসি ও বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।’ পরিষদের ডিস্ট্রিক্ট ইঞ্জিনিয়ার দেবপ্রিয় নিয়োগী বলেন, ‘পথশ্রী-৩ প্রকল্পে ১০১টি রাস্তার মধ্যে ৭৪টি রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। ২৭টির কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই ওই কাজ শেষ হবে।’
পথশ্রী-৩ প্রকল্পে ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষে কোচবিহার জেলায় ১৫৬ কিলোমিটার ৪০০ মিটার রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এর জন্য ৪৬ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়। জেলা পরিষদ এরজন্য ১০৭টি রাস্তার টেন্ডার করে। যদিও পরে একটি রাস্তার টেন্ডার এসআরডিএ-র সঙ্গে মিলে যাওয়ায় সেটি বাতিল হয়। ফলে ১০৬টি রাস্তার টেন্ডার হয়। এর মধ্যে ১০১টি রাস্তার কাজ শুরু হয়। বাকি পাঁচটি রাস্তার জন্য টেন্ডারে কেউ অংশ না নেওয়ায় সেই রাস্তাগুলির কাজ এখনও শুরু হয়নি। এই রাস্তাগুলির কাজ ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ করার কথা ছিল। কিন্তু এখন জুন মাস শেষ হতে চললেও শুরু হওয়া ১০১টি রাস্তার মধ্যে মাত্র ৭৪টি রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলির কাজ এখনও চলছে। জেলার ১২টি ব্লকের মধ্যে শুধুমাত্র সিতাই, হলদিবাড়ি, মেখলিগঞ্জ ও কোচবিহার-২ এই চারটি ব্লকে রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। শীতলকুচি ব্লকে দুটি রাস্তার কাজ বাকি রয়েছে। কোচবিহার-১ ব্লক সহ বাকি ব্লকগুলিতেও বেশকিছু রাস্তার কাজ বাকি রয়েছে। এর মধ্যে তুফানগঞ্জ-১ ব্লকে সবচেয়ে বেশি রাস্তার কাজ বাকি। বর্ষা শুরু হওয়ায় সেই কাজ কবে শেষ হবে সে বিষয়ে কেউই পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারছে না।
কী কারণে এই সমস্যা বলে প্রশ্ন জোরালো হয়েছে। এর পিছনে ঠিকাদারদের একাংশের গড়িমসির বিষয়টি মূলত উঠে এসেছে। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের তরফে এর জন্য বেশকিছু ঠিকাদারকে শোকজও করা হয়েছে। যদিও বিশেষ সূত্রে খবর, সময়মতো টাকা না আসার কারণেই মূলত এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এক ঠিকাদার বললেন, ‘সবাই তো আমাদের দোষ দিয়েই খালাস! কিন্তু কাজ করে যদি তাঁরা সময়মতো টাকা না পান তবে কীভাবে কাজ করবেন?’