কোচবিহার: নেতারা শুধু প্রতিশ্রুতিই দেন। কাজের কাজ আদৌ কতটা হয়? এমনই প্রশ্নের মুখে পড়েছেন গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদিকউল্লাহ চৌধুরী। গত ২৩ ডিসেম্বর কোচবিহার জেলা বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে প্রকাশ্যে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দিনদশেকের মধ্যে কোচবিহারে ধুঁকতে থাকা গ্রন্থাগারগুলিতে ৩০ জন কর্মী নিয়োগে করা হবে। তবে দশদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও নিয়োগের কোনও উদ্যোগ জেলায় দেখা যায়নি বলে অভিযোগ।
শুক্রবার পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে কোনও অর্ডার আসেনি বলে জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক শিবনাথ দে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অর্ডার চলে আসবে। অর্ডার চলে এলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করব।’
বইমেলার উদ্বোধনের দিন মঞ্চে সাংসদ জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার মুখে উঠে আসে গ্রন্থাগারগুলির হালহকিকতের কথা। তিনি সেসময় বলেছিলেন, ‘বই থাকলেও বেশ কয়েকটি গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিক নেই। সেগুলিতে শীঘ্রই নিয়োগ প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘পরীক্ষা হওয়ার পরেও কেন সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে রয়েছে?’ একেবারে উদ্বোধনী মঞ্চে সাংসদ এই প্রশ্ন তোলায় কিছুটা হলেও অশ্বস্তিতে পড়ে যান গ্রন্থাগারমন্ত্রী। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের কিছু বিধিনিষেধের কারণে সময় লাগছে। ১৫০ জনের নিয়োগ সামান্য কারণে আটকে রয়েছে। জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিককে বিষয়টি দেখতে বলেছি। ১০ দিনের মধ্যে ৩০টি নিয়োগের খবর আপনারা পাবেন।’
এদিকে, গ্রন্থাগারে নিয়োগ নিয়ে তুলোধোনা করতে ছাড়ছে না বিরোধী শিবির। এবিষয়ে বিজেপি নেতা বিরাজ বসু বলেন, ‘ওঁদের কাজই কথা দিয়ে কথার খেলাপ করা। মন্ত্রী সকলের সামনে কথা দিয়ে গেলেও তিনি তাঁর কথা রাখতে পারলেন না। এটা ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছু না।’
জেলায় ১১০টি লাইব্রেরি থাকলেও মোট গ্রন্থাগারিকের সংখ্যাটা মাত্র ২১। কর্মীসংকটের জেরে বেশ কয়েকটি লাইব্রেরি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। জেলায় ১০২টি গ্রামীণ লাইব্রেরি, সাতটি টাউন লাইব্রেরি এবং একটি স্টেট লাইব্রেরি রয়েছে। শহরের পান্থশালা এলাকার টাউন লাইব্রেরির পাশাপাশি মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের পূর্ব অঙ্গারকাটা লাইব্রেরি সহ একাধিক লাইব্রেরি বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে গ্রন্থাগারিকের অভাব থাকলেও কর্তৃপক্ষ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। এব্যাপারে সাংসদের প্রতিক্রিয়া, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে গ্রন্থাগারমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।’ এবিষয়ে গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকউল্লাহ চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন না তোলায় তাঁর বক্তব্য মেলেনি।