বক্সিরহাট: বাবা সবজি বিক্রি করেন। এক চিলতে টিনের ঘরে পরিবারের সকলের স্থান সংকুলান হয় না, সেখানেই পড়াশোনা। কিন্তু তাতে কি? হাজারো প্রতিবন্ধকতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে মাধ্যমিকে রাজ্যের মেধা তালিকায় নবম স্থান করে নিয়েছে বক্সিরহাট হাইস্কুলের ছাত্র তুষার দেবনাথ। তুষারের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪। বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখে তুষার। তবে সেই স্বপ্ন পূরণে এখনও অনেকটা পথ বাকি। আপাতত ছেলের উচ্ছ শিক্ষা নিয়ে চিন্তিত বাবা তপন দেবনাথ। এদিন তপনবাবুর বাড়িতে ছিল খুশির আমেজ। ছেলের সাফল্যে অনেকেই বাড়ি বয়ে এসে শুভেচ্ছা জানিয়ে গিয়েছেন। তারই মধ্যে তপনবাবু চিন্তিত ছেলের উচ্চশিক্ষার খরচ নিয়ে। সবজি বিক্রি করে কোথা থেকে এই খরচের যোগাড় হবে তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না তিনি।
ছোট থেকেই বরাবর ভালো রেজাল্ট করেছে তুষার। তাই তার ধারণা ছিল মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট হবেই। সে কারণে কষ্ট করে হলেও ছেলের পড়াশোনার দিকে নজর ছিল তপনবাবুর। বাড়িতে একটি টিনের ঘরেই তুষার ভাই ও বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে তুষার। ৬ জন গৃহ শিক্ষকের কাছে তুষারকে পড়িয়েছেন তার বাবা। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও বই এবং অর্থ দিয়ে তাকে সাহায্য করেছে। তুষারের ভালো রেজাল্টের জন্য প্রতিবেশীরাও খুশি। তারাও তুষারকে সহযোগিতা করেছিল বিভিন্নভাবে। তুষারের ভালো ফলের খবর পেয়েই একে একে তার বাড়িতে এসেছেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়, কোচবিহার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি পুষ্পিতা রায় ডাকুয়া, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিত দে ভৌমিক, তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের বিডিও প্রসেনজিৎ কুণ্ডু। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও তুষারের রেজাল্টে খুশি। তারা সবাই তুষারের বাবাকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। ছেলে যতক্ষণ বাড়িতে পড়াশোনা করতো তার পাশেই থাকতেন তুষারের মা। আজ তিনিও ছেলের সাফল্যে খুশি। তুষার বাংলায় ৯৩ ইংরেজিতে ৯৯ অংকে ১০০ ভৌত বিজ্ঞানে ১০০ জীবন বিজ্ঞানে ৯৯ ইতিহাসে ৯৩ এবং ভূগোলে ১০০ পেয়েছে।