নাগরাকাটা: প্রাথমিক স্কুলে বসবে রিডিং ফেস্টিভ্যালের আসর। গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল খুললে ওই কর্মসূচি পালিত হবে। তাতে পড়ুয়ারা পাঠ্য বিষয়ের কোনও অংশ কিংবা জানা-অজানা গল্প শব্দ করে পড়বে। কিছু গল্প মিশনের পক্ষ থেকে জেলাগুলিতে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা যেতে পারে। ইতিমধ্যেই সমগ্র শিক্ষা মিশনের রাজ্য শাখার তরফে জেলাগুলিকে রিডিং ফেস্টিভ্যালের বিষয়টি নিয়ে নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে স্কুল শিক্ষার নানা স্তরে এমন কিছু কর্মসূচি পালিত হলেও রাজ্যজুড়ে সমগ্র স্কুলে এই ধরনের রিডিং ফেস্টিভ্যালের সিদ্ধান্ত প্রথম।
সংশ্লিষ্ট শীর্ষ মহল জানাচ্ছে, পড়ুয়াদের শিখন সামর্থ্য বাড়ানোর জন্যই এই উদ্যোগ। সমগ্র শিক্ষা মিশনের জলপাইগুড়ির সহ প্রকল্প আধিকারিক রাজীব চক্রবর্তী বলেন, ‘নির্দেশিকা মিলেছে। সেই মোতাবেক স্কুল খোলার পর পদক্ষেপ করা হবে। ছাত্রছাত্রীদের পড়ার অভ্যাস তৈরি, উচ্চারণে সাবলীলতা ও সেই সঙ্গে শিখন সামর্থ্যের দক্ষতা বৃদ্ধি কর্মসূচিটির উদ্দেশ্য।‘
রিডিং ফেস্টিভ্যালে পড়ুয়াদের অভিভাবক সহ গ্রামবাসীদেরও আমন্ত্রণ করা যেতে পারে বলে সমগ্র শিক্ষা মিশন জানিয়েছে। শিক্ষক শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় ছাত্রছাত্রীরাই এই কর্মসূচিটির আয়োজন করবে। তার আগে পড়ুয়াদের তৈরি করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরজন্য শ্রেণিভিত্তিক কিছু কাজকর্ম করা যেতে পারে বলে সমগ্র শিক্ষা মিশন জানিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ভাষা শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন কিছু খেলাধূলা, ছবি দেখিয়ে সে সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের কিছু বলতে বলা, আগে শিক্ষকদের কোনও গল্প পাঠ করে শোনানো ও তারপর ছাত্রছাত্রীদেরও তা জোরে বলতে বলা। পরবর্তীতে শিক্ষক যেমনভাবে পাঠ চালিয়ে যাবেন পড়ুয়ারাও সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বইয়ে আঙ্গুল দিয়ে সেই অংশ নীরবে অনুসরণ করবে। রয়েছে ব্যক্তিগত ও দলগত পাঠে অভ্যাস করানোর কথাও। ছড়া পাঠের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সমগ্র শিক্ষা মিশনের নির্দেশিকায়।
শিক্ষা মহল জানাচ্ছে, খেলাচ্ছলে পড়ার এই রিডিং ফেস্টিভ্যাল ছাত্রছাত্রীদের আত্মবিশ্বাস তৈরিতে সাহায্য করবে। বাড়বে শব্দ ভান্ডারের ওপর দখল। সরব পাঠের অভ্যাস তৈরিতেও সাহায্য করবে কর্মসূচিটি। ঠিকমতো পড়তে না পারার কারণেই প্রাথমিক শিক্ষায় পড়ুয়াদের ফাঁক থেকে যায়। এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণিতে গিয়ে সেই ফাঁক ক্রমশ চওড়া হতে শুরু করে বলে শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা। এই ধরনের কর্মসূচি ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতেও সাহায্য করবে বলে শিক্ষা মহল মনে করছে।