উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দীর্ঘ বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত মণিপুর। রবিবার মণিপুরের বেশ কয়েকটি জায়গা নতুন করে উত্তপ্ত হয়। এদিকে সোমবার মণিপুরে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর আগেই রাজ্যের উপদ্রুত এলাকায় চিরুনিতল্লাশি শুরু করেছে আধা সামরিক বাহিনী। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর দাবি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ‘৪০ জন জঙ্গি’ নিহত হয়েছেন। অভিযান এখনও চালিয়ে যাচ্ছে সেনা।
মণিপুরে গত কয়েক দিন ধরে কুকি এবং মেইতেই জনজাতির মধ্য সংঘর্ষ চলছে। সে কারণে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মণিপুরে। এখনও পর্যন্ত এই উত্তপ্তকর পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত মারা যাওয়ার খবর মিলেছে কমপক্ষে ৭০ জনের। গত ২৫ দিন ধরে সেখানে বন্ধ করে রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। বহু মানুষ ঘরছাড়া। রবিবার রাত দুটো থেকে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের চারপাশে অন্তত ৫টি এলাকায় হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। সেকমাই, সুগনু, কুম্বি, ফায়েং প্রভৃতি এলাকায় হামলার খবর মিলেছে। এর মধ্যে সেকমাইতে সংঘর্ষ শেষ হয়েছে। তবে এই ভোর রাত থেকে চলা সংঘর্ষ এই দুই জনজাতির মধ্যে হয়নি বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কুকি জঙ্গি এবং নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তাতেই বিভিন্ন জায়গায় মৃত্যু হয়েছে ৪০ কুকি জঙ্গির।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেন, ‘‘নিরস্ত্র নাগরিকদের খুন করেছে কুকি জঙ্গিরা। সাধারণ নাগরিককে এম-১৬, একে-৪৭, স্নাইপার বন্দুক নিয়ে আক্রমণ করেছে জঙ্গিরা। অনেক গ্রামে ঢুকে বহু ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা। সেনা এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সহায়তায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করছি। কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলা রাজ্য সরকারকে উৎখাত করতেই এ সব করা হচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, শান্তি অভিযানে মণিপুরে রয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায়। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গিদের হামলা পূর্বপরিকল্পিত।
ইম্ফলের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ফায়েঙে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে তাঁরা খবর পেয়েছেন। হাসপাতালে বিষেনপুরের বাসিন্দা ২৭ বছরের খুমান্থেম কেনেডি নামে এক কৃষকের দেহ আনা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী এবং শিশুসন্তান রয়েছে। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, আরও অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে মণিপুরের এই অস্থির পরিস্থিতিতে রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেছে ২৫টি কুকি জঙ্গি গোষ্ঠী। সেই চুক্তি মেনে নির্দিষ্ট শিবিরে থাকার কথা তাদের। অস্ত্র পরিত্যাগ করার কথা। এই পরিস্থিতিতে কারা হামলা চালাল, কেন চালাল, সেই প্রশ্ন উঠছে।