শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: পদ্মশ্রী করিমুল হকের সৌজন্যে বাইক অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে পরিচিত অনেকেই। সেই বাইকে করে রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়। এবার আরেক আপৎকালীন পরিষেবা মিলবে বাইকে। বিশেষ ওই বাইক চটজলদি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ করবে। পোশাকি নাম ‘ফায়ার বাইক’ (Fire Bike)। হিলা চা বাগানে জয় জোহর মেলায় একটি ফায়ার বাইক নিয়ে আসা হয়েছে।
আপাতত জলপাইগুড়ি জেলার (Jalpaiguri) মালবাজার এবং ধূপগুড়ি দমকলকেন্দ্রে একটি করে ফায়ার বাইক নিয়ে আসা হয়েছে। মালবাজার দমকলকেন্দ্রের সাব-অফিসার রিন্টুকুমার সরকার বলেন, ‘বিভিন্ন অলিগলি কিংবা প্রত্যন্ত এলাকায় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে দমকলের বড় গাড়ি ঢোকাতে খুব সমস্যা হয়। সেই জায়গাগুলিতে এবার ফায়ার বাইক খুব সাহায্য করবে।’
ফায়ার বাইকটির বৈশিষ্ট্য কী? এককথায় বললে দমকলের আগুন নেভানোর গাড়িতে যে সমস্ত ব্যবস্থা থাকে, তার সবটাই ওই ফায়ার বাইকে রয়েছে। কিন্তু ‘মিনি ভার্সন’। ফায়ার বাইকের পেছনে দু’ধারে জলের ট্যাংক রয়েছে। তার একেকটি ১৫ লিটারের। অর্থাৎ একবারে ৩০ লিটার জল বাইকের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। সাধারণত দমকলের গাড়িতে থাকা জলের ট্যাংকে ন্যূনতম আড়াই হাজার লিটার জল মজুত থাকে। এর বাইরে পাঁচ কিংবা সাড়ে ছয় হাজার লিটার আয়তনের ট্যাংকও অনেক গাড়িতে থাকে।
ফায়ার বাইকের জল ফুরিয়ে গেলে কী হবে? মালবাজার দমকলের ফায়ার অপারেটার মণীশকুমার মিশ্র বলছেন, ‘বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে। যেখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটবে, তার আশপাশে যদি কুয়ো, পুকুর বা অন্য কোনও জলের উৎস থাকে, তবে সেখান থেকে হোসপাইপ দিয়ে সহজেই জল নেওয়া যাবে।’
দমকল আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ফায়ার বাইকে মিনি পাম্প রয়েছে। সেটা দিয়ে জল ছেটানো কিংবা ট্যাংকে জল ভরার কাজ হয়। জলের চাপও যথেষ্ট। ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে, ৩০-৪০ ফুট পর্যন্ত প্রবল বেগে জল আগুন পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। পেট্রোল, ডিজেল বা কেরোসিনের মতো তেল থেকে ঘটা অগ্নিকাণ্ডও নেভানো সম্ভব। বাইকে সোজাসুজি বা স্প্রে’র মাধ্যমে ফোম ব্যবহারের ব্যবস্থাও রয়েছে। আগুনের চরিত্র বুঝে হোসপাইপের নল পরিবর্তন করে যে কোনও ধরনের জল ব্যবহার করা যায় ওই ফায়ার বাইকে। পাশাপাশি রয়েছে দমকলের অতিপরিচিত জরুরিকালীন আলো সহ সাইরেন।
দমকলকর্তারা জানাচ্ছেন, সংকীর্ণ স্থানে চটজলদি পৌঁছে যাওয়া এই ফায়ার বাইকের মূল বৈশিষ্ট্য। এছাড়া, কোথাও আগুন লাগলে দমকলকেন্দ্র থেকে গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে অনেকটা সময় লেগে যায়। ফায়ার বাইক দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে দেবে। এতে ক্ষতি কিছুটা হলেও এড়ানো যাবে। তাছাড়া, ছোটখাটো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সামাল দিতে ফায়ার বাইকই যথেষ্ট।