বারবিশা: পুরো ফিল্মি কায়দায় বন দপ্তরের অভিযান চলল বুধবার সকালে। তারপরই আন্তঃরাজ্য চোরাই কাঠ পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ফের বড় সাফল্য পেল বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের ভল্কা রেঞ্জ। গত ছয় মাসে আন্তঃরাজ্য কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে প্রায় এক কোটি টাকার চোরাই কাঠ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভল্কা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার প্রভাত বর্মন বললেন, ‘আন্তঃরাজ্য কাঠ পাচারের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান লাগাতার চলবে। এই পাচারচক্রের বাকি পান্ডাদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি।’
রেঞ্জ অফিসার প্রভাতকুমার বর্মনের নেতৃত্বে ভল্কা রেঞ্জ, কামাখ্যাগুড়ি মোবাইল রেঞ্জ এবং চকচকা চেকপোস্ট রেঞ্জের যৌথ উদ্যোগে এদিন সীমানায় চেকিং চলছিল। সেসময় একটি কনটেনারকে দেখে সন্দেহ হয় বনকর্মীদের। বারবিশায় জাতীয় সড়কের ওপর সেটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তাঁরা। বুঝতে পারেন, কোথাও একটা গণ্ডগোল রয়েছে। গাড়িটি গতি বাড়িয়ে দেয়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পিছুধাওয়া করার পর তেঁতুলতলায় গাড়িটা আটকাতে পারেন বনকর্মীরা। সুযোগ বুঝে কনটেনারের চাবি নিয়ে পালিয়ে যায় কনটেনারচালক। কনটেনারের ভিতরে থরে থরে সাজানো মূল্যবান বার্মাটিক। কোনও বৈধ কাগজ না দেখাতে পারায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাচারের কাজে জড়িত আরেকটি চার চাকার গাড়ির মধ্যে থাকা দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের নাম আসমত আলি এবং মাজিত আলি। তাদের বাড়ি কোচবিহার জেলার বক্সিরহাটে। পরে ক্রেনের সাহায্যে গাড়িটিকে ভল্কা রেঞ্জে নিয়ে আসা হয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই পাচারচক্রের বাকি পান্ডাদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বন দপ্তর।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অসম থেকে আলিপুরদুয়ার এবং শিলিগুড়ি হয়ে উত্তরপ্রদেশে বার্মাটিক পাচারের ছক ছিল। কিন্তু সেই ছক ভেস্তে দেন বনকর্মীরা। এদিন ২৫০ সিএফটি বার্মাটিক বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় দশ লক্ষ টাকা। এই ঘটনার পর গত ছয় মাসে মোট ছয়টি গাড়ি সহ প্রায় এক কোটি টাকার চোরাই কাঠ বাজেয়াপ্ত করেছে ভল্কা রেঞ্জ। যার মধ্যে তিনটি বার্মাটিকের গাড়ি এবং দুটি সেগুন কাঠের আসবাবের গাড়ি ছিল।
গত ২৭ জুন কাঠের আসবাব অসমের ডিমাপুর থেকে বিহারে পাচারের ছক ছিল পাচারকারীদের। বাজেয়াপ্ত সেই আসবাবের বাজারমূল্য আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা। ৪ অগাস্ট ১৫ লক্ষ টাকার বার্মাটিক বাজেয়াপ্ত করা হয়। তালিকাটা আরও বড়।