কালিয়াগঞ্জ: সীমান্ত পারাপারের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় কালিয়াগঞ্জের এক বাড়ি থেকে বাড়ির মালিকসহ চার বাংলাদেশি যুবককে গ্রেপ্তার করল কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী রাধিকাপুর অঞ্চলের মীর্জাগড় এলাকার ঘটনা। রবিবার বিকেলে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। বিদেশিদের অবৈধভাবে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশের চার যুবক সহ বাড়ির মালিককেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার সকালে ধৃত পাঁচজনকেই রায়গঞ্জ জেলা আদালতে তোলা হয়।
কালিয়াগঞ্জ থানার আই সি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, ধৃত বাংলাদেশি যুবকরা হলেন বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বাসিন্দা বিপ্লব হেমব্রম(১৯), কৃষ্ণ রায়(২১), সুজন মার্ডি(২২) এবং দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা হৃদয় সরকার(২৩)। এছাড়া অবৈধভাবে বিদেশিদের আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে মীর্জাগড়ের বাসিন্দা হাবুলচন্দ্র দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ওরা আনুমানিক দেড় মাস আগে খুব সম্ভবত হেমতাবাদ সংলগ্ন বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। কিছুদিন দিল্লিতে শ্রমিকের কাজও তাঁরা করেছে। রাধিকাপুর দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার পরিকল্পনা ছিল। তার আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। আইন আইনের পথেই চলবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গোরু, কাফ সিরাপ পাচারের পাশাপাশি রাধিকাপুর এখন মানুষ পাড়াপাড়ের করিডর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। রাধিকাপুরের বাসিন্দারা জানান, স্থানীয় কিছু বাসিন্দা অবৈধভাবে বাংলাদেশের মানুষ পারাপারের ব্যবসায় নেমেছেন। তাদেরই একজন হলেন হাবুল। এমন আরও হাবুল রয়েছে রাধিকাপুরে। সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে আর্থিক দেওয়া নেওয়ার হিসাব টেনে রাতের আকাশে কাটাতারের বেড়ার আশপাশ দিয়ে চলছে এই ব্যবসা। মূলত পেটের দায়ে বাংলাদেশের উঠতি যুবকরা এধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ভারতে এসে চেন্নাই, বোম্বে, হায়দরাবাদ, কলকাতা, দিল্লির মতো বড় বড় শহরে এই অবৈধ উপায়ে আসা বিদেশি আগন্তুকরা ইমারত তৈরিতে শ্রমিক হিসাবে কাজে যুক্ত হন। অনেকেই আবার কারসাজি করে নিজেদের সরকারি পরিচয় পত্র বানিয়েও নেন।
রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ভরনা রায় বলেন, ‘মানব পাচারের ক্ষেত্রে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাত থাকতেও পারে। তবে, এধরণের ঘটনার কথা আমি প্রথম শুনলাম। আগামী দিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের এবিষয়ে সচেতন করা হবে যাতে, বিনা কাগজপত্রে আসা কোনও বাংলাদেশি মানুষকে যেন কেউ বাড়িতে আশ্রয় না দেয়।‘