বীরপাড়া: রোজার মাস শুরু হতেই চাহিদা বাড়ল ফলের। পাশাপাশি দামও বাড়ল। বীরপাড়া, ফালাকাটায় সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে আপেলের। এতদিন ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কেজি প্রতি দর ছিল আপেলের। তবে রমজান মাস শুরু হতেই উৎকৃষ্ট মানের আপেলের দাম ঠেকেছে কেজি প্রতি কমবেশি ৩০০ টাকায়। তাই বড়জোর ২০০ টাকা কেজি প্রতি দামের নিম্নমানের আপেল কিনছেন গরিবরা। রোজাদাররা ফল কিনতে গিয়ে দাম নিয়ে আক্ষেপ করছেন। খুচরো বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরো বাজারেও দাম বেড়েছে।
এদিকে, রমজানে ফলের মূল্যবৃদ্ধির আঁচ ইফতারের থালার পাশাপাশি পড়েছে ঠাকুরঘরেও। ফালাকাটা শহরের সঞ্জয় ভাওয়াল বলছেন, ‘পুজোর জন্য বছরভর কমবেশি ফল কিনতেই হয়। কিন্তু প্রতি বছর রমজান মাসে দাম বেড়ে যায়। এবছরও ব্যতিক্রম হয়নি। দাম বেড়েছে দুধেরও।’ শিশুবাড়ির আবুল কালাম আজাদ বীরপাড়ায় ফল কিনতে কিনতেই বললেন, ‘রমজান মাসে বেশি পরিমাণে আপেল কিনি। কিন্তু সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে আপেলের।’
বীরপাড়ার ফল বিক্রেতা মহম্মদ নাসিরউদ্দিন আনসারি বললেন, ‘দাম বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়ায় আমাদের কোনও হাত নেই। পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে। কার্টন প্রতি আপেলের পাইকারি দাম বেড়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তাই খুচরো বাজারেও দাম বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু দাম বাড়লেও আমাদের লাভ বাড়েনি। বরং বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে হচ্ছে।’
বীরপাড়া, ফালাকাটায় খোঁজখবর নিয়ে জানা গিয়েছে, কেজি প্রতি আঙুরের দাম কমবেশি ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পেঁপের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি কমপক্ষে ১০ টাকা। রমজান মাসে অন্য ফলের পাশাপাশি কলার চাহিদা থাকে। কারণ চিঁড়ে-মুড়ি ভিজিয়ে দুধ এবং কলা দিয়ে মেখে ইফতার হিসেবে তা অনেকেই খান। তবে এখনও পর্যন্ত বীরপাড়ায় কলার দাম বাড়েনি। মাঝারি মানের মালভোগ কলা আগের মতোই ডজন প্রতি ৬০ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে। তবে যে চাঁপাকলা আগে একেকটি ২-৩ টাকায় বিক্রি হত, এখন তার দাম ৪ টাকা গোটা।
বীরপাড়ার পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের আরেক ফল বিক্রেতা মহম্মদ শফি বলেন, ‘দাম বাড়া কিংবা কমা পুরোটাই নিয়ন্ত্রিত হয় পাইকারি বাজার থেকে।’ একই বক্তব্য ফালাকাটার ফল বিক্রেতা সুকুমার সূত্রধরের। বুধবার তিনি জানালেন, মূল্যবৃদ্ধির জেরে খুচরো বিক্রেতাদের লাভের অঙ্ক কমেছে।
বীরপাড়ার মহম্মদ হাকিম খান বলছেন, ‘ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে এই মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা রোজা পালন করেন। ইফতারে কোনও না কোনও ফল রাখা রেওয়াজ। তাই এমাসে ফলের চাহিদা বাড়ে। এই সুযোগটাই নেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।’ বীরপাড়ার মোতি খান বলছেন, ‘প্রতি বছর রমজান মাসে ফলের দাম বাড়ানোয় সমস্যায় পড়েন দরিদ্ররা।’ ফালাকাটা শহরের শরফরাজ খানের কথায়, ‘প্রতি বছর রমজান মাসে পরিকল্পনা করেই ফলের দাম বাড়ানো হয়। এনিয়ে প্রশাসনের নজর রাখা উচিত।’