মানিকচক: একের পর ভিটেমাটি, জমি গিলে ফেলার পর গঙ্গা এবার এগিয়ে আসছে স্কুলের দিকে। এবার নদীগর্ভে যেতে বসেছে গোপালপুর অঞ্চলের একটিমাত্র হাইস্কুল ও প্রাথমিক স্কুলও। এলাকার পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার ভাঁজ দুই স্কুলেই।মানিকচকের গোপালপুর অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গঙ্গা ভাঙন অব্যাহত। বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও স্থায়ী ভাঙন রোধের কাজে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্য সরকারের বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের কাজে গঙ্গাকে রোখা যাবে না। স্থানীয়দের শঙ্কা, পরিস্থিতি এমন থাকলে গোপালপুর হাইস্কুল ও হুকুমতটোলা প্রাথমিক স্কুল গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।
গোপালপুর হাইস্কুল থেকে গঙ্গার বর্তমান দূরত্ব ১৫০ মিটার। হুকুমতটোলা প্রাথমিক স্কুল থেকে গঙ্গার দূরত্ব মেরে কেটে ৫০ থেকে ৭০ মিটার। প্রচণ্ড রুদ্ররূপে বয়ে চলেছে গঙ্গা। ছোটখাটো ভাঙন রোজকার ঘটনা। এলাকাবাসীর দাবি, স্থায়ী ভাঙন রোধের কাজ না হলে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে এই দুটি স্কুল গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, পুরোনো গোপালপুরে গোপালপুর হাইস্কুল ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ভাঙনে গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যায় সেই স্কুলের ভবন। বেশ কয়েক বছর ভবনহীন অবস্থায় পড়ে থাকে। পরে ১৯৯৮ সালে গোপালপুরের হুকুমতটোলায় নতুন করে গোপালপুর হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা পায়। বর্তমানে এই স্কুলের ছাত্র সংখ্যা ১৩৫২। পুরো গোপালপুর অঞ্চলে একটি মাত্র হাইস্কুল রয়েছে। এই স্কুল ভবন গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে গেলে বহু ছাত্রছাত্রীর পড়াশুনা লাটে উঠবে। হুকুমতটোলা প্রাথমিক স্কুলে বর্তমান ছাত্র সংখ্যা ১৫১। গ্রামবাসীর আশঙ্কা, বড় ধরনের ভাঙন শুরু হলেই যে কোনও মুহূর্তে তলিয়ে যেতে পারে এই প্রাথমিক স্কুল।
শঙ্কার ভাঁজ গোপালপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীরেন্দুনারায়ণ মল্লিকের গলায়। তিনি জানালেন, ‘যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে স্কুল ভবনটি গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। গোপালপুর অঞ্চলে একটিমাত্র হাইস্কুল রয়েছে। এই স্কুলটি না থাকলে এই এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন কী যে হবে বুঝতে পারছি না।’
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ এজাবুলের দাবি, ‘স্থায়ী ভাঙন রোধের কাজ না হলে গোপালপুর হাইস্কুল ও হুকুমতটোলা প্রাথমিক স্কুলকে বাঁচানো যাবে না। আগামী দুই-এক বছরেই এই স্কুল তলিয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই এলাকাবাসী ভাঙনের ভয়ে নিজেদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র পড়ে রয়েছে এই স্কুল ভবন দুটি।’