Alipurduar | পানিঝোরার পর গরমবস্তি, আরেক বইগ্রাম

শেষ আপডেট:

আয়ুষ্মান চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার শহর (Alipurduar) থেকে জংশন হয়ে ৩১সি জাতীয় সড়কে উঠে হাসিমারাগামী রাস্তা ধরে এগোতে হবে। খানিক দূর গিয়ে প্রধান রাস্তা থেকে বাঁদিকে ঘুরলেই বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের অধীনে থাকা গ্রাম, গরমবস্তি। এখন সেই গ্রামে গেলে দেখা যাবে ব্যস্ততার ছবি। সেখানে একটা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার তৈরি হচ্ছে।

শহর থেকে গরমবস্তির দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। সেখানে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বানানো হচ্ছে কেন? কারণ আর কয়েকদিনের মধ্যেই এই গ্রাম হয়ে উঠবে জেলার দ্বিতীয় বইগ্রাম। ঠিক যেভাবে পানিঝোরা গ্রামের চেহারা থেকে সবকিছু বদলে গিয়েছে, সেভাবেই ভোল পালটাবে গরমবস্তিও। নেপথ্যে সেই আপনকথা নামের সংগঠনটি। এই মাসের শেষের দিকে বইগ্রাম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে গরমবস্তি। ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রতীক মারাক থেকে শুরু করে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য নিশু মারাক সকলেই আশাবাদী। বলছেন, এলাকার পড়ুয়াদের এর ফলে অনেক উন্নতি হবে।

আপনকথার সম্পাদক পার্থ সাহার কথায়, ‘পানিঝোরাকে বইগ্রাম হিসেবে গড়ে তোলা ছিল পাইলট প্রোজেক্ট। সেটা সফল হওয়ার পর এবার গরমবস্তির দিকে আমরা নজর দিয়েছি।’

বইগ্রাম পানিঝোরা ইতিমধ্যেই রাজ্যে চর্চার বিষয়। ওই গ্রামের পড়ুয়ারা এখন অনেকটাই বইমুখী। এখন গরমবস্তির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি ও স্থানীয় ভাষায় লেখা গল্প, কবিতা, নাটকের বই রাখা হবে। সেইসঙ্গে চাকরির বইও থাকবে। সব মিলিয়ে হাজারখানেক বই থাকবে। সপ্তাহে ১ দিন স্পোকেন ইংলিশের ক্লাস হবে। ছবি আঁকা, গান, নাচ, আবৃত্তি শেখানো হবে। মেয়েদের আত্মরক্ষার পাঠও দেওয়া হবে। আর বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে ওই গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেখানকার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী নিশা ছেত্রীর গলায় ঝরে পড়ল উৎসাহ। বলল, ‘আমরাও চেয়েছিলাম আমাদের গ্রামে পানিঝোরার মতো কিছু হোক। খুব ভালো লাগছে।’

বইয়ের প্রতি ভালোবাসা আরও ছড়িয়ে দিতে চাইছেন পার্থরা। যেমন গরমবস্তির পর তাঁদের লক্ষ্য মাঝেরডাবরি, অসুরধুরাবস্তি, কালকূট বনবস্তি, ফালাকাটার একটি চা বাগান ও টোটোপাড়ায় বইগ্রামের মতোই পদক্ষেপ করা হবে।  পিছিয়ে পড়া আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে পড়াশোনার বিস্তারে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে তারা। সেই কাজে হাব অ্যান্ড স্পোকস মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে হাব হবে পানিঝোরা।

জেলার প্রথম বইগ্রাম পানিঝোরা নিয়েও কিন্তু আরও নতুন নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেমন সেখানকার প্রত্যেকটি বাড়ি, হোমস্টে এবং দোকানগুলির নামকরণ হবে কালজয়ী নানা বইয়ের নামে। সেই কাজ শনিবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। কোনও বাড়ির নাম খেয়া, কোনও বাড়ির নাম চাঁদের পাহাড় বা আরণ্যক। সেইসঙ্গে উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট লেখকদের বইয়ের নামেও নাম থাকবে। আপাতত কাঠের ফলক বানিয়ে, তাতে নাম লিখে বাড়িতে লাগাচ্ছে গ্রামের ছেলেমেয়েরাই। এর মূল উদ্দেশ্য হল, বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো এবং বই সম্পর্কে জ্ঞানের প্রসার।

Shahini Bhadra
Shahini Bhadrahttps://uttarbangasambad.com/
Shahini Bhadra is working as Trainee Sub Editor. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Online. Shahini is involved in Copy Editing, Uploading in website.

More like this
Related

Bolder export | সোমবার থেকে ফুলবাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে যাবে না ভুটানের ট্রাক, হুঁশিয়ারি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের    

ফুলবাড়িঃ সোমবার থেকে ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে...

Heroin smuggling | শিলিগুড়ি হয়ে হেরোইন কারবার নেপাল-ভুটানে, নজরে পাব-বার

শিলিগুড়িঃ শিলিগুড়িকে ট্রানজিট পয়েন্ট করে হেরোইন যাচ্ছে ভুটান, নেপালেও!...

Darjeeling | বোর্ড পুনর্গঠন হয়নি, উন্নয়ন থমকে পাহাড়ে

রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: ২০১৪ সালে রাজ্য সরকার দার্জিলিং পাহাড়ে...