গৌতম দাস, গাজোল: অত্যন্ত মেধাবী তরুণী। এমএ ডিগ্রি রয়েছে। স্কুলে পড়াবেন বলে বিএড করেছিলেন। এছাড়া সেট পাশ করেছিলেন। মাদ্রাসা বোর্ডের চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। আগামী ১৯ তারিখ কলকাতায় ছিল ইন্টারভিউ।
এমন এক মেধাবী গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল তাঁর ঘর থেকে। মৃতের নাম নাইমা আখতারা শবনম (২৭)। নিহত গৃহবধূর পরিবার মেয়েকে খুন করার অভিযোগে স্বামী তারিকুর রহমান, শ্বশুর মসিউর রহমান, শাশুড়ি ফরিদা বেগম, দেওর, দেওরের স্ত্রী এবং এক আত্মীয়া রশিদা খাতুনের নামে গাজোল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির সকলেই বেপাত্তা। এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গাজোলের করকচ পঞ্চায়েতের উত্তর নওগ্রাম এলাকায়।
মৃতের পরিবারের বাড়ি কুশমণ্ডির ভোল্লাকুড়ি গ্রামে। তার জ্যেঠতুতো দাদা ফরমান আলির বক্তব্য, ‘শবনম অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিল। এমএ, বিএড, সেট পাশ করেছিল। মাদ্রাসা বোর্ডের চাকরির পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয়েছিল। আগামী ১৯ জানুয়ারি কলকাতায় ছিল ইন্টারভিউ। বিয়ের মাস ছয় পর থেকে শুরু হয় মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার। শুক্রবার বিকেল তিনটে নাগাদ তারিকুর ফোনে জানায় শবনম অসুস্থ। গাজোল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ পরে আবার ফোনে জানায় মারা গেছে শবনম। খবর পেয়ে আমরা এসে মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখি।’
যদিও স্থানীয় বাসিন্দা মোকসেদুর রহমানের দাবি শবনমের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘শুক্রবার দুপুরে নমাজ পড়বে বলে পড়ার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। ওই সময় বৌমাকে ডাকাডাকি শুরু করে শাশুড়ি। দরজা না খোলায় চিৎকার চ্যাঁচামেচি করে বাইরে বেরিয়ে আসেন। আমি পাশের একটি চায়ের দোকানে ছিলাম। সবাই মিলে ছুটে গিয়ে দরজা ভেঙে দেখি গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলছে ওই গৃহবধূ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’
গতকাল মৃত ওই বধূর দেহ রাখা হয় গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। এদিন সকালে দেহের সুরতহাল করেন বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাস। এরপর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মালদা মেডিকেলে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।