গোকুলাম কেরল – ২ (রিশাদ, এমিল)
মহমেডান স্পোর্টিং – ১ (আজহারউদ্দিন)
কলকাতা : যুবভারতীতে কলকাতার দলের জাতীয় লিগ বা আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৃশ্য বর্তমান প্রজন্ম দেখেনি। তাই গত কয়েকদিন ধরে পারদ চড়ছিল শহরের। কিন্তু পরপর দুবার আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলো গোকুলাম কেরল (৪৩ পয়েন্ট)।
মোহনবাগান যেবার প্রথম জাতীয় লিগ জেতে, সেই ১৯৯৭-৯৮ সালের পর আর যুবভারতী সাক্ষী থাকেনি কোনও দলের হাতে ট্রফি ওঠার। ২০১৯-২০ মরশুমে মোহনবাগান ফের ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন হলেও সেটা ছিল কল্যাণীতে। তাই শনিবার যুবভারতী ভরাতে মহমেডানের পাশে দেখা গেল লাল-হলুদ সমর্থকদেরও। সম্ভবত নিজেদের না জেতার হতাশা কাটাতে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতেই আগমন তাঁদের। কিন্তু প্রতিবেশি ক্লাবের জয়ের সাক্ষী হওয়াও শেষপর্যন্ত তাঁদের হল না। প্রায় ৪৮ হাজার দর্শকের আশায় জল ঢেলে ম্যাচটা হেরেই গেল মহমেডান (৩৭ পয়েন্ট)।
মহমেডান এর আগে আই লিগে খেললেও চিরকালই আয়ারাম-গয়ারামের দলে ছিল। বারবার নেমে যাওয়া, বড় ব্যবধানে হার, এতদিন এসবেরই যন্ত্রনা বয়ে বেড়িয়েছেন সাদা-কালো সমর্থকরা। গত মরশুমও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে ছিল না মহমেডান। এবারও মাঝে কয়েকটা ম্যাচ ড্র করে দলটা দৌড় থেকে ছিটকেই গিয়েছে মনে হচ্ছিল। তখনই গোকুলামের অবাক হারে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত জিইয়ে থাকলো লড়াইটা। গোকুলামের যেখানে ড্র করলেই চলতো সেখানে মহমেডানকে চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে জিততেই হবে। এমন পরিস্থিতিতে ঘরের মাঠে খেলতে নেমে সাদা কালো কোচ আন্দ্রে চেরনিশভ দলকে শুরু থেকে ওপেন ফুটবল খেলালেন। কারণ তাঁর দলের কাছে ড্র বা হারের অর্থ একই, ট্রফি ঘরে আসবে না। কিন্তু এটাই বুমেরাং হয়ে গেল তাঁদের কাছে।
মহমেডানের যাবতীয় আক্রমন ছিল ডানপ্রান্তিক, অ্যান্ডেলো রুডোভিচের মাধ্যমে। প্রথমার্ধে খেলার রাশ নিজেদের হাতে রাখতে পারলেও সেভাবে গোলমুখ খুলতে পারেননি মার্কাস জোসেফরা। খেলার বিপরীতে বরং দুটো সহজ সুযোগ ছিল গোকুলামের সামনে। একবার তাহির জামান গোলে শট নেওয়ার আগেই বল ক্লিয়ার করেন আশির আখতার। আর দ্বিতীয়টার ক্ষেত্রে ফাঁকায় উঠে আসা জামাইকান জর্ডাইন ফ্লেচারকে বাইরে বেড়িয়ে এসে বক্সের অনেক বাইরে থেকে শট নিতে বাধ্য করেন গোলরক্ষক জোথানমাওইয়া। শট গোলে রাখতে পারেননি ফ্লেচার।
বিরতির পরেই নিজেদের খেলার ধরনটা পালটে ফেললো গোকুলাম। যার ফসল, দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল পাওয়া। লুকা ম্যাজকেনের পাস থেকে রিশাদের দ্বিতীয় পোস্টে নেওয়া শটের সময়ে কিছু করার ছিল না জোথানমাওইয়ার। এই গোলের ঠিক পরে পরেই ৫৬ মিনিটে মার্কাস জোসেফের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ফ্রি-কিকটা যখন আজহারের পায়ে লেগে গোলে ঢোকে, তখন গোটা যুবভারতী জুড়ে যে শব্দব্রক্ষ্ম তৈরি হল তা কলকাতা কেঁপে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট।
কিন্তু মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে গোল করে মহমেডানের জয়ের শেষ পথটাও বন্ধ করে দেয় গোকুলাম। এই গোলটা একেবারেই প্রথমটার কপিবুক যেন। শুধু রাশিদের জায়গায় গোলটা করলেন এমিল বেনি। শেষদিকে কিছু সুযোগ পেলেও শেষপর্যন্ত মোহনবাগানকে ছোঁয়া হল না মহমেডানের।
আরও পড়ুন: আই লিগে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে নামছে মহমেডান স্পোর্টিং