উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ভয়ঙ্কর কাণ্ড! এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে দোকান থেকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠল এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি দক্ষিণবঙ্গের নিউ টাউনের যাত্রাগাছি এলাকার হলেও অভিযুক্ত উত্তরবঙ্গের প্রশান্ত বর্মন নামে এক ব্যক্তি। গত ৩১ অক্টোবর দক্ষিণ বিধাননগর থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত পদক্ষেপ না নেওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিলা। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের নীলদা পোস্টঅফিস এলাকার দিলমাটিয়া গ্রামে। তবে থাকতেন দত্তাবাদে। নিখোঁজ হওয়ার পরের দিন দক্ষিণ বিধাননগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গিয়ে পরিবারের লোকেরা জানতে পারেন, যাত্রাগাছি বাগজোলা খালপাড়ের ঝোপের মধ্যে থেকে এক ব্যক্তির দেহ মিলেছে। মৃতের ছবি দেখে পরিবারের লোকেরা স্বপনের দেহ শনাক্ত করেন।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ২৮ অক্টোবর দত্তাবাদের সোনার দোকান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় স্বপন কামিলা ও অপর এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোবিন্দ বাগকে। সেই রাতেই গোবিন্দকে ছেড়ে দেওয়া হলেও স্বপনকে নিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা। মৃতের পরিবারের দায়ের করা অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, স্বপনকে অপহরণ করে খুনের নেপথ্যে রয়েছেন নিজেকে বিডিও পরিচয় দেওয়া প্রশান্ত বর্মণ।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর স্বপনের দোকানের সামনে দু’টি গাড়ি আসে। একটি সাদা, অন্যটি কালো। একটি গাড়ির মাথায় নীলবাতিও লাগানো ছিল। ওই গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি নিজেকে প্রশান্ত বর্মন বলে পরিচয় দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও ৪-৫ জন। তাঁরাই স্বপন এবং গোবিন্দ বাগকে তুলে নিয়ে যান। প্রশান্ত নিজেকে বিডিও বলে পরিচয়ও দেন। পরিবারের অভিযোগ, অপহরণের দিন কয়েক আগে প্রশান্তের বাড়িতে নাকি বেশ কিছু সোনার অলঙ্কার চুরি গিয়েছে। ওই চুরির ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নিতে কয়েক দিন আগে প্রশান্ত বর্মন এসেছিলেন সোনার দোকানে। দোকানে এসে বিডিও দাবি করেছিলেন, তাঁর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া সোনার অলঙ্কার না কি ওই দোকানে বিক্রি করা হয়েছে। সেই নিয়ে খোঁজখবর নিতে এসেছেন। এরপরেই দুজনকে বিডিও ও তাঁর লোকজন তুলে নিয়ে যায়। একদিন পরে স্বপনের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় বাগজোলা খালপাড়ের ঝোপে।
মৃতের ভাই রতন কামিলার অভিযোগ, তাঁর দাদাকে খুন করা হয়েছে। এই খুনে অন্যতম অভিযুক্ত ‘বিডিও’ প্রশান্ত বর্মন। দত্তাবাদের দোকান থেকে সোনার জিনিস এবং সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে যান প্রশান্তরা। সম্প্রতি স্বপন শ্বশুরের অসুস্থতার খবর পেয়ে ওডিশায় গিয়েছিলেন। সেই সময় তখন গ্রামে দু’টি গাড়ি করে কয়েক জন এসেছিলেন। তাঁরা এসে স্বপনের খোঁজখবর করেছিলেন।
অপহরণ করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রশান্ত বর্মন ও রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মন একই ব্যক্তি কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। যদিও খবরের সত্যতা যাচাইয়ে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার রাজগঞ্জ বিডিওকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে উনি ফোন কেটে দেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

