বালুরঘাট: আরজি করের রেশ কাটতে না কাটতে বংশীহারীতে (Banshihari) নির্যাতিত হতে হল নাবালিকাকে। যৌন হেনস্তার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। তাই গৌড়বঙ্গে প্রথম প্রশাসনিক স্তর থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাইমারি স্কুলে শুরু হতে চলেছে গুড টাচ ব্যাড টাচ বিষয় (Good Touch Bad Touch Education)। বৃহস্পতিবার জেলার প্রতিটি সার্কেল বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে প্রস্তাবনামূলক চিঠি পাঠিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের (Dakshin Dinajpur) জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) সানি মিশ্র। তাঁর মতে, সম্ভবত রাজ্যে প্রথম এই জেলায় এমন নির্দেশিকা বের হল।
পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে জেলার প্রতিটি প্রাইমারি স্কুলে শুরু হতে চলেছে গুড টাচ ব্যাড টাচ বিষয়। এর আগে জেলার এক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। তারপরেই জেলার ১৮টি সার্কেলে একাধিক প্রস্তাব উল্লেখ করে এই কাজের নির্দেশিকা এসেছে। তবে এই বিষয়টি শুধু ছাত্রীদের জন্য নয়। ছাত্রদের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখন মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
সানি মিশ্র জানান, ‘২০১৭ সালে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির চিঠিতে স্কুলে পড়ুয়ারাদের সুরক্ষার জন্য কমিটি তৈরির কথা বলা হয়েছিল। তার মাধ্যমেও এই কাজ করা যেতে পারে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে শুধু পড়ুয়াদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত হবে তাই নয়, স্কুলের পরিবেশও ভালো হবে। আমার বিশ্বাস, সকলের সহযোগিতায় ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে। ভবিষ্যতে আমরা প্রতিটা স্কুল পরিদর্শন করে এই কর্মসূচির অগ্রগতির উপরে নজর রাখব।’
জেলার একমাত্র মহিলা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবলীনা চ্যাটার্জির বক্তব্য, ‘আরজি কর কাণ্ড সহ বিভিন্ন ঘটনায় আমাকে খুব ভাবিয়েছে। আমার মনে হয়, স্কুল লেভেল থেকেই গুড ও ব্যাড টাচ সম্পর্কে শিশুদের সচেতন করা উচিত। পাশাপাশি, অভিভাবকদেরও সচেতন থাকাটা জরুরি।’
বালুরঘাট প্রাইমারি স্কুলের টিআইসি অনিমেষ চক্রবর্তী বলেন, ‘নিশ্চয়ই এটি খুব ভালো উদ্যোগ। তবে শিক্ষকদেরও এই বিষয়টি নিয়ে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। যাঁরা এই বিষয়ে অভিজ্ঞ, তাঁদের দিয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে পড়ুয়াদের আরও ভালোভাবে শেখাতে পারব।’
জারি করা নির্দেশিকায় বয়স উপযুক্ত পাঠ তৈরি করে ব্যক্তিগত সীমানা, নিরাপদ ও অনিরাপদ স্পর্শ ও কথা বলার গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ, কর্মশালা আয়োজন করে অভিভাবকদের যুক্ত করা, কাউন্সেলিং পরিষেবার কথাও বলা হয়েছে। পাশাপাশি, বর্তমানে চলা আনন্দ পরিসর প্রকল্পে যুক্ত করে এই শিক্ষাদান চলতে পারে। তার সঙ্গে নিয়মিত এই কর্মসূচির মূল্যায়ন ও অভিভাবক শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া নেওয়া যেতে পারে।