শুভদীপ শর্মা, লাটাগুড়ি : বৃষ্টির দেখা নেই। উত্তরে তাপমাত্রাও ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। সে কারণে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গরমে নাজেহাল অবস্থা গরুমারার কুনকিদের। সেদিকে খেয়াল রেখে ‘ডিউটি’তে কুনকিদের কিছুটা ছাড় দিয়েছে বন দপ্তর। মাহুতরা তাদের ওপর বিশেষ নজর রাখছেন। পরিবর্তন আনা হয়েছে খাদ্যতালিকায়। মেনুতে ঠাঁই পেয়েছে শসা, আখ। ‘বিশ্বস্ত সহকর্মী’দের ফিট রাখতে পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে চিকিৎসকদেরও। এবিষয়ে উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণী বিভাগের বনপাল ভাস্কর জেভি জানিয়েছেন, কুনকিরা বন দপ্তরের অন্যতম সম্পদ। তাদের সুস্থ রাখার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বন দপ্তর সূত্রের খবর, বর্তমানে গরুমারায় কুনকির সংখ্যা ২৭টি। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি শাবকও রয়েছে। জঙ্গল ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় বনকর্মীদের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কুনকিদের।
গরুমারা জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণী বিশেষ করে গন্ডারের ওপর চোরাশিকারিদের নজর থাকে। অতীতে একাধিকবার চোরাশিকারিদের হাতে প্রাণ গিয়েছে বন্যপ্রাণীর। সেই সব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে জঙ্গলে তীক্ষ্ণ নজর রাখে বন দপ্তর। একাজে বনকর্মীদের বিশ্বস্ত সহযোগী কুনকি। হাতির পিঠে চেপে জঙ্গলের আনাচে-কানাচে নজরদারি চালান কর্মীরা। তবে গত কয়েকদিনের গরমে আমজনতার মতো কাহিল কুনকিরাও। তবে এই গরমে তাদের যাতে কোনও শারীরিক সমস্যা না হয়, সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করেছে বন দপ্তর। সিদ্ধান্ত হয়েছে কাজে কিছুটা ছাড় দেওয়ার। গোটা জঙ্গলের পরিবর্তে এখন শুধু নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় নজরদারির কাজে লাগানো হচ্ছে হাতিদের।
এবিষয়ে গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের এডিএফও রাজীব দে জানান, কিছুটা কাজের পর কুনকিদের বিশ্রাম দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মূর্তি নদীতে তাদের স্নানের সময়ও বাড়ানো হয়েছে। জঙ্গলে তাদের দিয়ে সাতসকালে কিংবা বিকেলের পর নজরদারি চালানো হচ্ছে। পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে চিকিৎসকের। তাঁর সংযোজন, বৈশাখের গরমে খানিক স্বস্তি দিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে কুনকিদের খাদ্যতালিকায়। চাল, ডাল, কলাগাছের পাশাপাশি হাতিদের শসা ও আখ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি একই কুনকিকে দিয়ে কাজ না করিয়ে সমস্ত কুনকিকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নজরদারিতে ব্যবহার করা হচ্ছে।