হলদিবাড়ি: মরশুমের শুরুতে লংকার ভালো দাম মেলায় মুখে চওড়া হাসি হলদিবাড়ির লংকাচাষিদের। টমেটোর দাম না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা লংকার ভালো দাম মেলায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে। ভিনরাজ্যে টমেটোর চাষ শুরু হওয়ায় সেখানকার বাজারে হলদিবাড়ির টমেটোর চাহিদা কম ছিল এবছর। ফলে ভালো দাম পাননি চাষিরা। তবে লংকার ভালো দাম পেলে সেই ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি ভিনরাজ্যে হলদিবাড়ির লংকার চাহিদা বরাবর বেশি থাকে। তাই চাষিরা ভালো লাভের আশায় ব্যাপক হারে লংকা চাষ করেন। সেই লংকা পাইকারের হাত ধরে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, নেপাল, দিল্লি, হরিয়ানা, দেরাদুন, জৈনপুর পাড়ি দেয়। এবছর এখন পর্যন্ত বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব ও দিল্লিতে পাড়ি দিয়েছে হলদিবাড়ির লংকা।
লংকা চাষের উপযোগী পরিবেশের কারণেই হলদিবাড়ি সহ সংলগ্ন এলাকায় লংকার ভালো ফলন ও গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি কৃষি বিশেষজ্ঞদের। লংকা ব্যবসায়ী সাত্তার মহম্মদ, তাপস দত্ত, প্রণব চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এবছর মরশুমের শুরুতে লংকার দাম বেশ ভালো। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। রবিবার হলদিবাড়ি পাইকারি বাজারে সুপার লংকা ৩০, আকাশি লংকা ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ভিনরাজ্যে হলদিবাড়ির উৎপাদিত সুপার প্রজাতির লংকার চাহিদা খুব বেশি। বর্তমানে হলদিবাড়ি পাইকারি বাজারে দিনে প্রায় ১০০ টন লংকার আমদানি হচ্ছে। তা ১০ থেকে ১২টি ট্রাকে লংকা ভিনরাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। ভরা মরশুমে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩০-৩৫ ট্রাক হবে বলে অনুমান পাইকারদের।
হলদিবাড়ির লংকাচাষি সুজিত মণ্ডল, কৃষ্ণ দাস জানান, বর্তমানে এক বিঘা জমিতে লংকা চাষে খরচ হয় কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। প্রতি মাসে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচবার লংকা তোলা যায়। ভালো ফলন হলে জমিতে বিঘা প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১২ মন করে লংকা ওঠে।
হেমকুমারীর কৃষক মইনুল ইসলাম বলেন, ‘এবছর দু-বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করি। এরজন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৬২ হাজার টাকা। কিন্তু দাম না থাকায় একটি টমেটো বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়নি। গোরু দিয়ে পুরো খেত নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এবার লংকার ভালো দাম মেলায় সেই ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে আসবে।’