করাচি: ২৩ অক্টোবর ২০২২। মেলবোর্ন। বিরাট কোহলির অপরাজিত ৮২ রানের ক্লাসিক ইনিংসের সামনে জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করেছিল পাকিস্তান। ১৯তম ওভারের শেষ দুই বলে ম্যাচের রং বদলে দেওয়া হ্যারিস রউফকে মারা বিরাট কোহলির জোড়া ছক্কা আজও আলোচিত। মাঝে গঙ্গা-সিন্ধু দিয়ে প্রচুর জল বয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও যে বিরাট-ভূত তাড়া করে পাক পেসার রউফকে।
সামনে আরও একটা বিরাট যুদ্ধ। ২৩ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পুরোনো সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ রউফের সামনে। চোট কাটিয়ে দলে ফেরা পাক পেসারও ইতিহাসের চাকাটা ঘোরাতে বদ্ধপরিকর। তবে মহারণের আগে শত্রুতা নয়, বরং বিরাট-বন্দনায় মাতলেন হ্যারিস রউফ। জানালেন, সেদিন জোড়া ছক্কা হাঁকালেও তাঁর সম্পর্কে একটা খারাপ, আক্রমণাত্মক কথা কখনও বলেনি বিরাট।
পুরোনো স্মৃতি উসকে নিয়ে হ্যারিস বলেছেন, ‘ওই দুইটি ছক্কা নিয়ে কখনও আমার উদ্দেশে উলটোপালটা মন্তব্য, কটাক্ষ করেনি বিরাট। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা বেরিয়েছে, সব ভুলভাল খবর। প্রত্যেকেই বিরাটকে তাঁর ব্যাটিংয়ের জন্য প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিল। বিশ্বমানের খেলোয়াড়। ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক বরাবরই ভালো।’
রউফের যুক্তি, বিরাটের মতো ব্যাটারকে সামলানো বোলারদের জন্য সবসময় চ্যালেঞ্জ। তাঁর ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে মাত্র। তবে চ্যালেঞ্জটা তিনি পছন্দ করেন, সেটা বলতে ভুললেন না। এবার বিরাটকে জবাব ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। রবিবাসরীয় মেগা দ্বৈরথের প্রসঙ্গ টেনে রউফের সংযোজন, ‘রবিবার দুবাইয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ। একঝাঁক চ্যালেঞ্জ থাকবে। আমি যে চ্যালেঞ্জ উপভোগ করি। প্রস্তুতও। বিরাট প্রসঙ্গে বলব, ওর বিরুদ্ধে বোলিংয়ের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, অনেক কিছু শেখা যায়।’
সাইড-স্ট্রেনের ধাক্কা কাটিয়ে ম্যাচ ফিট বলেও দাবি করছেন। জানালেন, বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামার জন্যও প্রস্তুত। ৩১ বছরের রউফ বলেছেন, ‘ট্রেনিং সেশনে পুরো গতিতেই বল করছি। বুধবারের ম্যাচের আগে যা স্বস্তি দিচ্ছে। নিজের ফিটনেস, প্রস্তুতি নিয়ে আমি খুশি। তবে নিউজিল্যান্ড ম্যাচে খেলব কি না, সেটা নির্ভর করবে টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর।’
পাকিস্তানের স্পিন আক্রমণ নিয়ে প্রাক্তনদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও রউফের দাবি, খুশদিল শা, সলমন আলি আঘা রয়েছেন, যাঁরা প্রস্তুত স্পিন বিভাগের দায়িত্ব যথাযথভাবে সামলানোর জন্য। একজন স্পিনার নেওয়া হয়েছে বলে যা রটানো হচ্ছে, তা ঠিক নয়। দীর্ঘদিন পর পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আসর বসছে। রউফ আত্মবিশ্বাসী, ট্রফি ধরে রাখতে পারবেন তাঁরা।
এদিকে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি মহসিন নকভি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ করেছেন। পিসিবি’র আর্থিক সমস্যার কথা মাথায় রেখে তাঁর জন্য বরাদ্দ ৯৪ লক্ষ টাকা মূল্যের প্রিমিয়াম টিকিট ছেড়ে দিলেন। জানিয়ে দিলেন, পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের জন্য ওই ৩০ আসনের ভিআইপি বক্সের তাঁর প্রয়োজন নেই। ভিআইপি বক্সের টিকিট বিক্রি করে সমর্থকদের সঙ্গে বসেই খেলা দেখবেন। নিজের যে সিদ্ধান্তের কথা আইসিসি এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ক্রিকেট বোর্ডকে জানিয়েও দিয়েছেন।