হরিশ্চন্দ্রপুরঃ এবারে রাজ্য সরকারের কৃষক বন্ধুর টাকা প্রদান নিয়ে বড়সড় দুর্নীতি প্রকাশ্যে এল। অভিযোগ, হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায় কৃষক বন্ধুর টাকা নাবালকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিহারের বাসিন্দার অ্যাকাউন্টেও বাংলার কৃষক বন্ধুর টাকার যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ প্রকৃত কৃষকরা আবেদন করেও পাচ্ছেন না এই কৃষক বন্ধুর টাকা। অথচ অযোগ্যদের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে এই টাকা। এই দুর্নীতির পিছনে বড়সড় দালাল চক্র কাজ করছে বলে অভিযোগ। বন্যা ত্রাণ দুর্নীতি আবাস যোজনা দুর্নীতির পর এবার কৃষক বন্ধুতে দুর্নীতিকাণ্ডে খবরের শিরোনামে হরিশ্চন্দ্রপুর।
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের তেলজান্না সুইস গেট এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষক কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা থেকে বঞ্চিত। নির্দিষ্ট জমির ভিত্তিতে সেই কৃষকদের আইডি হয়েছে। কিন্তু কৃষক বন্ধুর টাকা ঢোকেনি তাদের অ্যাকাউন্টে। স্থানীয় সিএসপিতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন তাঁদের টাকা ঢুকছে নাবালকদের অ্যাকাউন্টে। একজনের কাছেই থাকছে ১০০ থেকে ১৫০ টি অ্যাকাউন্ট। তার মাধ্যমেই চলছে দুর্নীতি। একই পরিবারের ৫ থেকে ৬ জন নাবালকের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাচ্ছে টাকা। এমনকী বাংলার কৃষকদের টাকা চলে গিয়েছে বিহারের অ্যাকাউন্টেও।
কিন্তু প্রশ্ন কীভাবে সম্ভব হচ্ছে এই ধরনের জালিয়াতি? তবে কি দালালদের সঙ্গে যুক্ত থাকছে প্রশাসনের একাংশ। এত বড় জালিয়াতি হওয়া সত্ত্বেও কেন বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসেনি, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের বক্তব্য, কৃষকরা তাঁদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ এলেই প্রশাসন তদন্ত করবে।
অভিযোগকারী এক কৃষক মনসুর আলী বলেন, ‘প্রকৃত কৃষকরা টাকা পাচ্ছে না। আবেদন করেও আমাদের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা ঢুকছে না। অথচ এলাকার ছোট ছোট বাচ্চার অ্যাকাউন্টে কৃষক বন্ধুর টাকা ঢুকে যাচ্ছে। এলাকারই এক দালালের কাছে আমি নিজে ১০০ থেকে ১৫০টি ছোট ছোট বাচ্চার ব্যাংকের বই দেখেছি। এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই তারা কৃষক বন্ধু টাকা ঢুকিয়ে নিচ্ছে।’
এলাকার আরেক কৃষক আক্তার হোসেনের কথায়, ‘আমি দু’বার কৃষক বন্ধুর জন্য আবেদন করেছিলাম কিন্তু এখনও সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। এলাকার ছোট ছোট বাচ্চা ছেলে মেয়ে গুলো টাকা পেয়ে যাচ্ছে। যেটা কৃষক বন্ধুর শর্ত মোতাবেক পাওয়া যায় না। শুনছি পাশেই বিহার রাজ্যের কয়েকজন বাসিন্দার অ্যাকাউন্টেও টাকা যাচ্ছে। পিছনে দালালচক্র রয়েছে। আমরা অভিযোগ করব।’ যদিও ব্লক কৃষি আধিকারিক প্রভাত উৎপল আচার্য বলেন, এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও কৃষক অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।