হরিশ্চন্দ্রপুরঃ আমবাগানে খেলার ছলে এক কিশোর অপর কিশোরকে বালি ছিটিয়ে দেয়। গায়ে বালি লাগায় কিশোরটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি গিয়ে বাবার কাছে নালিশ করে। এরপরই ছেলেটির বাবা অভিযুক্ত কিশোরকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। রবিবার এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ভালুকা বাজারের ভেস্টপাড়া এলাকায়। আহত কিশোরের বাবা পরিযায়ী শ্রমিক বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত অভিভাবককে গ্রেপ্তার করেছে ভালুকা ফাড়ির পুলিশ। এদিনের ঘটনায় জখম কিশোরকে প্রথমে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রেফার করা হয়েছে কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে।
স্কুল বন্ধ। তাই বিকেলে আমবাগানে গ্রামের ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে খেলাধুলা করছিল। সেই সময় জিৎ দাস নামে এক কিশোর তার এক বন্ধুর দিকে খেলতে খেলতে বালি ছিটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এরপরই তার বন্ধু কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে গিয়ে বাবার কাছে বন্ধুর বিরুদ্ধে নালিশ করে। এরপরই ছেলের কথায় ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত কিশোরকে নির্মমভাবে মারধর করে বলে অভিযোগ। ছেলেটিকে বেশ কয়েকবার তুলে আছাড় দেয় দিপু মহলদার। এরপর দড়ি দিয়ে জিতের গলা পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করে। আর এই মারধরের জেরে জিতের নাক মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়। সেখানেই জ্ঞান হারায় ছেলেটি।
এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান জিতের বাবা বাদল দাস এবং ঠাকুমা পুষ্প দাস। সেখানেও দিপু মহলদার ও তার পরিবারের লোকেরা জিৎ এর বাবা এবং ঠাকুমা কে প্রাণে মেরে ফেলবার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। তড়িঘড়ি আহত কিশোরকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে পাঠানো হয় চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ওই কিশোরের অবস্থা আরও অবনতি হওয়ায় তাকে কলকাতা এনআরএস মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত হয় বলে খবর।
এদিকে কিশোরের ওপর অমানুষিক অত্যাচারের ঘটয়ায় জিতের পরিবারের পক্ষ থেকে গতকালই ভালুকা পুলিশ ফাঁড়িতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত দীপু মহালদার সহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমে দীপু মহলদারকে গ্রেপ্তার করেছে ভালুকা পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। রবিবার ধৃতকে মালদা জেলা আ দালতে তোলা হলে জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
আক্রান্ত কিশোরের দাদা ওঁকার দাস জানান, “আমার ভাই সহ কয়েকজন বন্ধু মিলে গতকাল বিকেলে আমবাগানে খেলাধুলা করছিল। সেই সময় কোনও কারণে বন্ধুদের মধ্যে একটু হাতাহাতি হয়। তখন আমার ভাইয়ের বন্ধুর বাবা দিপু মহলদার ঘটনাস্থলে এসে আমার ভাইকে নৃশংস ভাবে মারধর করে। এমনকি গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করে। ভাই এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। জানিনা বাঁচবে কিনা?