হরিশ্চন্দ্রপুরঃ এক মহিলা হোমগার্ডের জমি দখলকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মহেন্দ্রপুর গ্রামে। ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহতদের প্রথমে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পরে মালদা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়।
জানা গিয়েছে, মহেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা মহিলা পুলিশকর্মী কনক সরকার তার একটি জমি এলাকারই কয়েকজন ব্যবসায়ীকে বিক্রি করেন। আর ওই জমির অন্য একটি অংশে দীর্ঘদিন ধরে এই ভোগ দখলে রেখেছিলেন ওই গ্রামের হরেন স্বর্ণকার এবং তার ভাইয়েরা। অভিযোগ বেশ কিছুদিন ধরেই ওই জমির সামনের অংশের দখলদারি নিয়ে হরেন স্বর্ণকার এবং কনক সরকারের জমি কিনে নেওয়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে গন্ডগোল লেগেই ছিল। দুই পক্ষই জমির সামনের কিছু অংশ নিজেদের বলে দাবি করেন। চলতি সপ্তাহে এই জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। আজ সকালেও এই জমির দখল নেওয়াকে ঘিরে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় মহেন্দ্রপুর এলাকায়। দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে পাঁচজন আহত হন। তারা হলেন রুনা স্বর্ণকার (৫২), মনিশ স্বর্ণকার(২৮), নীতিস স্বর্ণকার (২৩) এবং চন্দ্রা স্বর্ণকার (৪৮), জাবির হোসেন (২৫)। এদের মধ্যে একজনকে মালদা মেডিকেল কলেজে বাকিদের চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে এসেছে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় পুলিশ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন হরেন স্বর্ণকার এবং অমিত সরকার।
আহত মনিশ স্বর্ণকার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই জমি ভোগ দখল করছি। আমাদের নামে রেজিস্ট্রি আছে। এখন ওরা জমির সামনের অংশ গায়েরজোরে দখল করতে চাইছে। আমরা বাধা দিয়েছি বলে আজকে আমাদেরকে মারধর করেছে। এদের মধ্যে অনেকেই শাসকদলের নেতা।’
অন্যদিকে আরেক পক্ষ তৃণমূল নেতা সাহেব দাস বলেন, ‘জমি আমি প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে বৈধভাবে কিনে নিয়েছি। সেই জমির বৈধ কাগজপত্র আমার কাছে আছে। জমির সামনের অংশের সমস্তটাই ওরা দখল করে রেখেছে। আমরা আমাদের অংশে বেশ কয়েক মাস আগে প্রাচীর দিয়েছিলাম তখন কোনও আপত্তি করেনি। এখন এলাকারই কিছু ব্যক্তির উস্কানিতে আমাদের অংশের জমি দখল করতে এসেছে। আমরা বাধা দিয়েছি আমাদেরকেই ওরা উলটে মারধর করেছে। আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।’
এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলাকায় শান্তি রক্ষার্থে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।