বিদেশ বসু, মালবাজার: রবিবার সকালের প্রবল বৃষ্টিতে মালবাজারের (Malbazar) মাল নদীর (Mal River) গতিপথ পরিবর্তনের প্রবণতা নিয়ে শঙ্কা বাড়ল। শুখা মরশুমের পর প্রথম ভারী বৃষ্টিতেই (Heavy Rain) ফুলেফেঁপে ওঠা মাল নদীর জলধারা রাস্তা বদল করতে শুরু করেছে। আর আসন্ন বর্ষাতে পরিস্থিতি কী দাঁড়াতে পারে তা ভেবেই প্রমাদ গুনছেন অনেকে। মাল পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’
মাল শহরের উত্তর-পূর্বাংশ দিয়ে মাল নদী বয়ে চলেছে। নদীর একধারে মাল শহরের ২, ১১ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ড। অন্য ধারে মেটেলি (Matelli) ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। শনিবার রাতে মাল শহরে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। রবিবার সকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ে। মাল নদীর জলস্রোত বেঁকে মেটেলি ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাটাইগোল বস্তিতে থাবা বসাতে শুরু করেছে। বস্তিবাসীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। সেখান থেকে আবার গতিপথ বদলে মাল নদী মাল শহরের শ্মশানঘাট লাগোয়া এলাকামুখী হয়েছে।
কয়েক বছর আগে শ্মশানঘাট লাগোয়া বাঁধের একটি বড় অংশ ভেঙে গিয়েছিল। এখনও তার মেরামতি হয়নি। বৃষ্টি বাড়লে কী হতে পারে তা নিয়েই এখন থেকেই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এলাকাবাসী। মাল পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন, ‘মাল নদীর গতি পরিবর্তনের বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’
শ্মশানঘাটে পাশের মহাকালপাড়ার বাসিন্দা রাহুল শা’র বক্তব্য, ‘আমরা নদীর রাস্তা পরিবর্তন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। সকালের দিকে জলস্রোত বেড়েছিল। পরে বৃষ্টি কমাতে জলস্রোত স্বাভাবিক হয়ে যায়। এবার নদী নিজের খেয়াল খুশিমতো চলছে। হঠাৎ করেই গতি বদলাচ্ছে।’
জলস্রোতে ভেসে যেতে পারে বাড়িঘর। তাই বৃষ্টি হলেই আশঙ্কায় রাত জাগছেন এলাকার অনেকেই। তরুণ সজিবুল ইসলামের কথায়, ‘এবার শনিবার নদীর জন্য প্রথম রাত জাগলাম। পাহাড়ের বৃষ্টিপাতের জেরে মাল নদীর জল হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার আরও নিদর্শন রয়েছে। আমরা তাই নদীকে নিয়ে দুশ্চিন্তাতেই থাকি।’ আর মাল শহরের দক্ষিণ কলোনির তরুণ কাজল শীলের কথায়, ‘এবার প্রথম প্রবল বৃষ্টিতেই যা রূপ দেখা যাচ্ছে তা দুশ্চিন্তাজনক।’
এদিকে, বর্তমানে নির্বাচনি আচরণবিধি বলবৎ রয়েছে। ফলে নতুন করে নদীর ভাঙন রক্ষার কাজ করার ক্ষেত্রেও নিয়মের গেরো রয়েছে। সেচ বিভাগের আধিকারিকরা গতিপথ বদলানোর প্রবণতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। এবিষয়ে তাঁরা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।