শিলিগুড়ি: দুপুর শেষেই মুখ ভার আকাশের। তারপর এক পশলা বৃষ্টি, কোনও দিন তার চেয়ে বেশি। ইতিমধ্যে একাধিক নদী টইটুম্বুর। পাহাড়ি বৃষ্টিতে ধস পড়াও শুরু। সোমবারই ধসের জেরে সিকিমে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এরইমধ্যে পাহাড় এবং সমতলের জেলাগুলিতে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দপ্তর। মঙ্গলবার থেকে টানা কয়েকদিন জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কালিম্পংয়ের পাশাপাশি উত্তর সিকিমের মংগন জেলাতেও।
আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহার বক্তব্য, ‘বাতাসের উপরিভাগে উত্তরবঙ্গ এবং সংলগ্ন এলাকায় একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণ জলীয় বাষ্প টেনে আনছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। ফলে এমন বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’ আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস পেয়ে জেলা প্রশাসনগুলিও প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে দিয়েছে।
বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। তাই আকাশে মেঘ দেখলেই অতীত অভিজ্ঞতায় বাঙালির মনে ভয় বাসা খোঁজে। বুধবার জামাইষষ্ঠী। ফলে আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা দেখে বাঙালি ডরাচ্ছে। মেয়ে-জামাই আসতে পারবে তো? দিনভর বৃষ্টি হলে বাজারটা হবে কী করে? নানান প্রশ্ন এবং দুশ্চিন্তা মাথার মধ্যে কিলবিল করছে অনেকের। আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কেও অনেকে খোঁজ খবর শুরু দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতি আর কতদিন থাকবে, সোমবার জিজ্ঞেস করেছেন অনেকে। শুধু মেয়ের বাবা যে জানতে চেয়েছেন তা নয়, আবহাওয়ার গতি প্রকৃতির দিকে নজর রাখছে জামাইরাও। ‘জামাই আদর’ -সুযোগ কি বারবার আসে, বললেন একজন।
তবে কারও জন্য সুখবর দিচ্ছে না আবহাওয়া দপ্তর। বরং প্রবল বর্ষণের আশঙ্কার কথাই শোনাচ্ছেন আবহবিদরা। নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথা বলছেন তাঁরা। আবহাওয়ার যা মতিগতি, তাতে মঙ্গলবার টানা তিন চারদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলায় ভারী বৃষ্টি হবে বিক্ষিপ্ত ভাবে। বুধবার কালিম্পংয়ে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এমন বৃষ্টি হতে পারে উত্তর সিকিমের মংগনেও।
ফলে তিস্তা সহ একাধিক নদীর ফুলেফেঁপে ওঠা শুধু সময়ের অপেক্ষা। তেমন ভাবেই পাহাড়ে বড় ধরনের ধস পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উল্লেখ্য, শনিবারের বর্ষণে সিকিমের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। ধস নেমেছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বেশ কয়েকটি জায়গায়। তবে পূর্ত দপ্তরের ন্যাশনাল হাইওয়ে ডিভিশন দ্রুততম সঙ্গে ধসের মাটি-পাথর সরিয়ে দেওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়নি। কিন্তু আগামীদিনে কী হবে, স্পষ্ট নয় কিছুই।