পতিরামঃ প্রায় শতবর্ষ প্রাচীন কালীপুজোকে কেন্দ্র করে পতিরামে মেতে ওঠেন হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। পাশাপাশি পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে তিনদিন ধরে মেলার আয়োজন হয় গ্রামে। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম উত্তর রায়পুরে প্রায় ১০০ বছর ধরে হয়ে আসছে বুড়ি কালীপুজো। এই পুজোয় হিন্দুরা যখন শামিল হন, তখন মুসলমান সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ মাজারে সিন্নি দেন। এরপরই এই সম্প্রদায়ের মানুষ গা ভাসিয়ে দেন পুজোয়। উভয় ধর্মের মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে মিলন মেলায় পরিণত হয় বুড়ি কালী তলা। মাজারের পাশেই রয়েছে শিবমন্দির। এই গ্রামেই একসঙ্গে ১৬টি টি থানে বিভিন্ন দেবদেবীর পুজো হয়।
সোমবার বুড়ি কালী পুজোর দিনেই মন্দিরের পাশেই মাজারে ফল ও সিন্নি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে গ্রামে শুরু হয়েছে তিনদিনের বিরাট মেলা। বুড়ি কালি পুজোর আগের দিন শ্মশান মাসনা কালী ও চামুন্ডা কালীর পুজো হয়েছে। সেই রাতে সাত রকমের ভাজার সঙ্গে চ্যাঙ মাছ পোড়া ভোগ দেওয়া হয়। আর বুড়ি কালী পুজো চলাকালীন সময়েই বিভিন্ন এলাকার মুসলিমরা মাজারে সিন্নি ও তরমুজ ফল চড়ান।
পুজো কমিটির পক্ষে বিশ্বনাথ সাহা, ভুট্টু সাহা, টুম্পা সাহা, পাপ্পু সাহা জানান, ‘প্রায় একশো বছরের পুরোনো এই বুড়ি কালী পুজো ও মেলা। একসঙ্গে ষোলো দেবদেবীর পুজো হয়। চারিদিকে রয়েছে বিভিন্ন ঠাকুরের থান। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই পুজোয় শামিল হন। এবারের মেলায় দুইদিনের বাউল গানের আসর বসবে। শেষ দিনে তিন হাজার মানুষের জন্য খিচুড়ি ভোগ রান্না হবে। উভয় ধর্মের মানুষের মিলনস্হল এই মেলা।’
মুসলিম সম্প্রদায়ের শুকু মণ্ডল বলেন, ‘আমার বয়স এখন পঁচাত্তর। আমার জন্মের আগে থেকেই এইখানে মাজারে সিন্নি ও ফল চড়ানো হয় এবং বুড়ি কালি পুজোকে কেন্দ্র করে আমাদের দুই সম্প্রদায়ের মানুষের তিনদিনের মেলা অনুষ্ঠিত হয়।’