গুয়াহাটি ও নয়াদিল্লি: ইউনেস্কোর (UNESCO) বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় (World heritage list) চলে এসেছে অসমের (Assam) অহম রাজবংশের সমাধিক্ষেত্র মৈদাম। বিশ্ব ঐতিহ্যের সাংস্কৃতিক সম্পত্তি বিভাগে তা স্থান পেয়েছে। কাজিরাঙা ও মানস জাতীয় উদ্যানের পর অসমের তৃতীয় ঐতিহ্যবাহী স্থান মৈদামকে চিনের রাজকীয় সমাধি ও মিশরে ফারাওদের পিরামিডের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
মৈদাম ভারতের ৪৩তম ঐতিহ্যক্ষেত্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের ঐতিহ্যের প্রতি অপরিসীম গর্ব প্রকাশ করে এই স্বীকৃতির তাৎপর্য তুলে ধরেছেন। তাঁর আশা, মৈদাম বিশ্ব সংস্কৃতির তকমা পাওয়ায় দেশবাসীর মনে অহম শাসন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ বাড়বে।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, চরাইদেওর মৈদামগুলি অহম সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের গভীরতা, তাঁদের সমৃদ্ধশালী সভ্যতার ঐতিহ্য ও স্থাপত্য দক্ষতাকে তুলে ধরে।
মৈদাম হল অহম রাজাদের সমাধিক্ষেত্র। এর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম। অহম রাজত্বে রাজাদের মৃত্যু হলে তাঁদের প্রিয় জিনিসপত্র সহ মৃতদেহ মিশরের পিরামিডের ধাঁচে মাটিতে সমাধিস্থ করা হত। সমাধির ওপরে তৈরি করা হত মাটির গম্বুজাকৃতি ঢিপি। এগুলি ইট ও পাথরে তৈরি। ফাঁপা। সুড়ঙ্গের মতো প্রবেশ পথ রয়েছে। দেখতে কিছুটা পিরামিডের মতো। অহম রাজত্বের ৯০ জন রাজা, রানি ও কিছু সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির সমাধিক্ষেত্র আছে। অহম রাজবংশ প্রায় ৬০০ বছর রাজত্ব করেছে। মৈদামের মূলক্ষেত্রটি ৯৫.০২ হেক্টর বিস্তৃত। বাফার জোনের পরিমাণ ৭৫৪.৫১১ হেক্টর।
সরকারি সূত্রের খবর, এ বছর ইউনেস্কোর কাছে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় নাম তোলার জন্য ভারত থেকে যায় অসমের চরাইদেও-য়ে থাকা মৈদাম। অসমের এই সমস্ত সমাধিক্ষেত্রগুলিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যাপক সমর্থন দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটস (আইসিওএমএএস)। বিশ্বমঞ্চে এই সংস্থার অপরিসীম প্রভাব রয়েছে। আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক মানচিত্রে অসমের মৈদাম স্থান পাওয়ায় এখানে পর্যটনশিল্প আরও সম্প্রসারিত হবে। মৈদামগুলির রক্ষণাবেক্ষণের প্রধান সমস্যা হল অসমে বিপুল বৃষ্টিপাত, ভূমিক্ষয়।